|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ০৩:১০ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৪৪ অপরাহ্ণ

‘২’ মুছে ৫২ কোটি টাকার কর হয়ে গেল ১২ কোটি


‘২’ মুছে ৫২ কোটি টাকার কর হয়ে গেল ১২ কোটি


চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগে বড় ধরনের কর জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নগরের দুটি কনটেইনার ডিপোর বার্ষিক কর মূল্যায়ন থেকে কৌশলে প্রথম অঙ্ক ‘২’ মুছে ফেলার মাধ্যমে প্রায় ৪০ কোটি টাকা কর কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশনে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র জব্দ করে।
 

দুদক সূত্রে জানা গেছে, কর কমিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সিটি করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারেন। এছাড়াও দুটি প্রতিষ্ঠানও এর সুবিধাভোগী। এই ঘটনা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়ায় কমিশন প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবে।
 

অভিযানের নেতৃত্বে থাকা দুদকের সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম বলেন, “নথি ঘষামাজা করে প্রথম অঙ্ক ‘২’ মুছে ফেলা হয়েছে। এর ফলে দুটি প্রতিষ্ঠানের ২০ কোটি টাকা করে গৃহকর কমে যায়। আমরা প্রমাণ সংগ্রহ করেছি এবং নথি জব্দ করেছি। এখন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 

সংশ্লিষ্ট দুটি প্রতিষ্ঠান হলো — মধ্যম হালিশহরে অবস্থিত এছাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং পতেঙ্গার লালদিয়া চরের ইনকনট্রেড লিমিটেড। ২০১৭–১৮ অর্থবছরে এই দুই প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক কর নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ও ২৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। তবে রিভিউ বোর্ডের শুনানিতে ফরম থেকে প্রথম অঙ্ক ‘২’ মুছে ফেলা হয়। ফলে কর দাঁড়ায় যথাক্রমে ৬ কোটি ৩৮ লাখ ও ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরীণ তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রাজস্ব বিভাগের দুই কর্মকর্তা — কর কর্মকর্তা নুরুল আলম এবং উপকর কর্মকর্তা জয় প্রকাশ সেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অনিয়মে সহযোগিতার অভিযোগে তিন হিসাব সহকারী — মঞ্জুর মোর্শেদ, রূপসী রাণী দেআহসান উল্লাহকে সচিবালয় বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।
 

সিটি করপোরেশনের সূত্রে জানা যায়, ইনকনট্রেড লিমিটেডের শুনানি হয়েছিল ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর এবং এছাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালের ১৩ জুন।
 

সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, “গৃহকর নির্ধারণে অনিয়ম আমাদের অভ্যন্তরীণ তদন্তে ধরা পড়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুদক আমাদের কাছ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়েছে।”
 

দুদকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাজস্ব ব্যবস্থায় জবাবদিহি ঘাটতির একটি দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা। তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হতে পারে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫