|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:৫১ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:১৭ অপরাহ্ণ

ভূয়া ক্যাশ বই প্রস্তুত করে কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক নূর মুহাম্মদ জামদ্দার শোকজ


ভূয়া ক্যাশ বই প্রস্তুত করে কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক নূর মুহাম্মদ জামদ্দার শোকজ


আবুল কালাম আজাদ ভূঁইয়াঃ-


 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী বৃন্দাবন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর মুহাম্মদ জামদ্দারের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে কোটি টাকার উপরে অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষকদের পেনশন ফান্ডের টাকা তছরুপ এবং অন্যান্য আর্থিক অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
 

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ‘শোকজ’ নোটিশ জারি করেছে এবং সাময়িক বরখাস্তের পর একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য জেলা প্রশাসক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিতভাবে আবেদন করা হতে পারে।
 

মূল অভিযোগ অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষক নিয়মবহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত বেতন ও অন্যান্য ফি যথাযথভাবে ব্যাংকে জমা না করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেছেন এবং বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
 

৫ আগস্টের পর শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের দুর্নীতি ও সংকট সমাধানের জন্য ২০ দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল—স্কুলের সমস্ত আয়-ব্যয় ও ব্যাংক হিসাব প্রকাশ করা, পূর্ববর্তী ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত করা, প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতির দায়িত্বকালে লুটপাটের হিসাব নিরূপণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং বিদ্যালয়ের সম্পত্তি থেকে অর্জিত আয়ের হিসাবসহ অন্যান্য দুর্নীতির তদন্ত করা।
 

পরে বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি রাশেদুল হক জানালেন, জানুয়ারি ২০২০ থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত ক্যাশ-খাতা ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট যাচাই করার পর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ লোপাটের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক মূল হিসাব আড়াল করতে ডুপ্লিকেট বা ভূয়া ক্যাশ বই তৈরি করেছেন।
 

অ্যাডহক কমিটি শোকজ নোটিশে লিখিতভাবে অভিযোগের ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে কমিটি জানায়, প্রধান শিক্ষক প্রদত্ত তথ্য সন্তোষজনক নয়। তাদের দাবি, মৌখিক স্বীকারোক্তি হলেও আত্মসাৎকৃত অর্থ বিদ্যালয়ের তহবিলে ফেরত দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হতো না।
 

প্রধান শিক্ষক নূর মুহাম্মদ জামদ্দার ফোনে বলেন, “আমার কাগজপত্র সব ঠিক আছে, ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে বসতে তারা চাইলে বসি।”
 

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বলেন, “প্রধান শিক্ষক কিছু কাগজ দেখিয়েছে, আমরা সব যাচাই করব।”
 

সাবেক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৌহিদ বলেন, “আমি এ ঘটনায় জড়িত নই। গত তিন বছর আগে আমি এখানে নেই। আমার সময় কোনো অভিযোগ পাইনি।”
 

বর্তমান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম ফারুক জানান, “ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অভিযোগ করেছেন। প্রধান শিক্ষক দুর্নীতিতে জড়িত কি না আমরা যাচাই করব। অনিয়ম প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 

সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ সেলিম মিয়া অভিযোগ অযৌক্তিক উল্লেখ করে বলেন, “আমরা প্রতি মাসে আয়-ব্যয়ের হিসাব যাচাই করেছি। কোনো ভুল হওয়ার সুযোগ নেই। বর্তমান ও সাবেক সভাপতি দায়িত্ব নেওয়া উচিত।”
 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষককে চাকরি বাঁচাতে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে মোটা অঙ্কের অবৈধ ঘুষ লেনদেন করার অভিযোগও রয়েছে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫