ঢাবি শিক্ষার্থীসহ প্রক্সি দিতে এসে ধরা ৭ জন

প্রকাশকালঃ ৩১ মে ২০২৩ ০৩:৩৮ অপরাহ্ণ ৬৪ বার পঠিত
ঢাবি শিক্ষার্থীসহ প্রক্সি দিতে এসে ধরা ৭ জন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাতজনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (৩০ মে) ‘এ’ ইউনিটের (মানবিক) পরীক্ষা চলাকালে চারটি শিফট থেকে সন্দেহজনকভাবে তাদেরকে আটক করা হয়। 

আটকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদে প্রক্সির বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন তারা। যাদের মধ্যে একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরেকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, মো. হোসাইন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার আব্দালপুর গ্রামের কাওসার হোসেনের ছেলে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন থেকে আটক করা হয়। তিনি ২১৬০২ রোল নম্বর এর মূল পরীক্ষার্থী জাহিদ হাসান সিয়ামের হয়ে প্রক্সি দেন।

মো. স্বপন হোসাইন নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার চক গোপিনাথ গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তিনি কৃষি অনুষদ ভবনের ১৩৫ নম্বর কক্ষে রোল নম্বর ২৪০৯৬-এর মূল পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন।

আব্দুর রাকিবকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের ৩৩৭ নম্বর কক্ষ থেকে আটক করা হয়।


তিনি মূল পরীক্ষার্থী। তবে তার হয়ে প্রক্সি দেওয়ার জন্য অন্য ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি করেন তিনি। সে অনুযায়ী প্রবেশপত্রের ছবিও পরিবর্তন করা হয়। তবে তার বাবার কাছে প্রক্সির জন্য টাকা চাইতে গেলে তিনি অস্বীকৃতি জানালে রাকিব নিজেই পরীক্ষা দিতে আসেন। মূলত ছবি পরিবর্তনের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়।

বিদ্যুৎ হাসান জয়পুরহাট সদর উপজেলার পূর্ব জানিয়ার বাগান গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের ২৩৪ নম্বর কক্ষে রোল নম্বর ৫৬৯৭৯-এর পরীক্ষার্থী মাইনুল ইসলামের হয়ে প্রক্সি দেন।


অপরদিকে, এনামুল হক একই ভবনের ৪৩৮ নম্বর কক্ষের রোল নম্বর ৫৮৩৯৭-এর পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

সোহানুর রহমানকে ড. কুদরত-ই-খুদা একাডেমিক ভবন থেকে আটক করা হয়। তিনি ২৪৪ নম্বর কক্ষের রোল নম্বর ৮২৪৪০-এর পরীক্ষার্থী তাহমিদ বিন সাদমান প্রিন্সের হয়ে পরীক্ষা দেন। সোহানুর পাবনা সদর উপজেলার লাইব্রেরি বাজার এলাকার আব্দুল হান্নানের ছেলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ১৩৯ নম্বর কক্ষের রোল নম্বর ৭৪২৬২-এর পরীক্ষার্থী রূপম সরকারের হয়ে প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হন একজন। তবে তিনি তার নাম-পরিচয় স্বীকার করেননি। 


সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, ‘আমরা প্রথমে সন্দেহজনকভাবে তাদেরকে আটক করেছি। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন। তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরম্নদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

রাজশাহী মেট্রোপলিট্রন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক বলেন, মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, প্রক্সিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের নামে মামলা করা হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।