ইসির হারানো ক্ষমতা ফিরছে, জোট হলেও ভোট নিজস্ব প্রতীকে

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বাতিল করার ক্ষমতাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা আবারও ফিরে পাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ঠেকাতে একক প্রার্থীর বিপরীতে ‘না’ ভোটের বিধান চালু হচ্ছে এবং ভোটের মাঠে সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতা দিয়ে যুক্ত করার প্রস্তাবও চূড়ান্ত হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২’ সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করা হয়। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাইয়ের পর উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন নিয়ে অধ্যাদেশ আকারে তা কার্যকর হবে। ফলে ঘোষিত আগামী ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন বিধান প্রযোজ্য হবে।
গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ও নতুন বিধান
-
একক প্রার্থী হলেও বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়া যাবে না; ‘না’ ভোটে জয় হলে পুনর্নির্বাচন হবে।
-
লটারি করে বিজয়ী নির্ধারণের বিধান বাতিল; সমান ভোটে পুনর্নির্বাচন হবে।
-
সশস্ত্র বাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিএনসিসি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আওতায় আনা হবে।
-
ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে।
-
অনিয়ম প্রমাণিত হলে এক বা একাধিক কেন্দ্র কিংবা পুরো আসনের ফল বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে।
-
ভোট গণনায় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকতে পারবেন, তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে।
-
জোটবদ্ধ হয়ে অংশ নিলেও প্রতিটি দলকে নিজস্ব প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
-
হলফনামায় মিথ্যা তথ্য প্রমাণিত হলে প্রার্থিতা ও সংসদ সদস্য পদ বাতিল করা যাবে।
-
রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলে নিবন্ধন স্থগিতের বিধান স্পষ্ট করা হয়েছে।
-
প্রার্থীর ব্যয়সীমা সুনির্দিষ্ট, ব্যক্তি ও দলীয় অনুদানের সীমা সমান করে ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ, ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে গ্রহণ বাধ্যতামূলক।
-
প্রচারণায় আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ, তবে ডিজিটাল বিলবোর্ডে বৈদ্যুতিক আলো ব্যবহার করা যাবে।
-
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মিথ্যাচার বা অপবাদ ছড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-
নারীর প্রতি সম্মান ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধের বিধান অন্তর্ভুক্ত।
দল নিবন্ধন প্রক্রিয়া
নতুন দল নিবন্ধনে আবেদনকারী ১৪৩ দলের মধ্যে তথ্য যাচাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ২২টি দল। এসব দলের মাঠ পর্যায়ে তদন্ত হবে। বাকি ১২১টি দল অযোগ্য বিবেচিত হয়ে কারণ দর্শানো নোটিশসহ আবেদন ফেরত পাবে। উত্তীর্ণ দলগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) প্রমুখ।
ইসি জানায়, এসব সংশোধনীর বেশিরভাগই ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের আগে কার্যকর ছিল, যা পরবর্তী সময়ে বাতিল হয়। এবার সেগুলো পুনঃপ্রবর্তন করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫