পাইকারিতে কমল খোলা তেলের দাম

খোলা সয়াবিন সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারে ১৪ টাকা এবং পাম তেল ৯ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ► আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ২৯.৩৬%, একইভাবে কমেছে পাম তেলের দামও
ভ্যাট পরিশোধের অজুহাতে বাজারে অস্থিরতা তৈরির পর খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোলা পাম তেল এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমেছে। পাম তেলের দাম কমেছে লিটারে ৯ টাকা এবং সয়াবিন তেলের দাম লিটারে কমেছে ১৪ টাকা। দাম কমার কারণ হিসেবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই কারণে ভোজ্য তেলের দাম কমেছে। একটি হচ্ছে, তেল পরিশোধন কারখানা থেকে সরবরাহ বেড়েছে। আরেকটি হচ্ছে, সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে, সেই বাড়তি দামে ক্রেতা মিলছে না; কিন্তু খোলাবাজারে দাম কমলেও বোতলজাত তেলে তার কোনো লক্ষণ নেই। কোনো কোনো জায়গায় আগের দরে কেনা বোতলজাত তেল বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে, সয়াবিন, পাম, সরিষা ও রাইস ব্র্যান তেল মিলিয়ে দেশে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। চাহিদার ১৩ লাখ টনই পাম তেল এবং পাঁচ লাখ টন সয়াবিন। বাকিটা সরিষা, রাইস ব্র্যানসহ অন্য তেল।
গত ৪ মে সরকার ভোজ্য তেলের নতুন দর নির্ধারণ করে। সে হিসাবে পাইকারি বাজারে পাম তেলের দাম হয় লিটারে ১২৯ টাকা। আর খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গতকাল বুধবার বিক্রি হয় লিটারে ১২০ টাকায়, যা সরকারি দরের চেয়েও লিটারে ৯ টাকা কম। একইভাবে খোলা সয়াবিন তেলের লিটারও সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে ১৪ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রির সরকার নির্ধারিত দর লিটারে ১৭৬ টাকা। আর খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গতকাল বিক্রি হয় লিটার ১৬২ টাকা।
খাতুনগঞ্জে ভোজ্য তেলের বড় আড়তদার আরএম এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর পারভেজ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমেছে আগেই কিন্তু দেশে বাড়ানো হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি, এখনো বলছি দাম বেঁধে না দিয়ে বাজারের ওপরই দর নির্ধারণের বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া হোক—তাহলে ভোক্তারাই সুফল পাবে।’
মূলত ভোজ্য তেল আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার সুবিধা ৩০ এপ্রিল শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই সরবরাহ কমিয়ে দেন ভোজ্য তেল মালিকরা। এর ফলে বাজারে সরবরাহ সংকট সৃষ্টি হয়। এই অজুহাতে দাম বেড়ে যায় পাম তেল ও সয়াবিন তেলের।
পাইকারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, ‘মিলগেটে নতুন ডেলিভারি অর্ডারের বিপরীতে তেল সরবরাহ দেওয়ায় বাজারে দাম কমেছে। চট্টগ্রামে সিটি গ্রুপের মিল ছাড়া সব মিল মালিক তেল সরবরাহ ঠিক রেখেছেন।
আমদানি বেড়েছে
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের বড় অজুহাত থাকে আমদানি কম হওয়া; কিন্তু বাস্তবে ভোজ্য তেল আমদানি বেড়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের হিসাবে, সর্বশেষ এপ্রিল মাসেই পাম তেল আমদানি হয়েছে এক লাখ ৭৮ হাজার টন। আর ২০২২ সালের এপ্রিলে আমদানি হয়েছিল ৭৩ হাজার ৬৮২ টন। পাম তেল আমদানির পুরোটাই এখন রেডি, অর্থাৎ পরিশোধন হয়েই আমদানি হয়েছে। আর সয়াবিন আমদানি হয়েছে অপরিশোধিত আকারে। এপ্রিল মাসে এসেছে ৬৯ হাজার ৫৮১ টন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমেছে
ইনডেক্স মুন্ডির হিসাব অনুযায়ী, গত ছয় মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে ২৯.৩৬ শতাংশ। একইভাবে কমেছে পাম তেলের দামও; কিন্তু এগুলোর সুফল পাচ্ছে না ভোক্তারা।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫