|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:০৫ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ১১ জুন ২০২৩ ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়ার দখলে থাকা একাধিক ফ্রন্টে আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেন


রাশিয়ার দখলে থাকা একাধিক ফ্রন্টে আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেন


রাশিয়ার দখলে থাকা বাখমুত, দোনেস্ক ও জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলের একাধিক ফ্রন্টে আক্রমণ শুরু করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। শুক্রবার জাপোরিজ্জিয়া থেকে বিবিসির সাংবাদিক কুয়েন্টিন সমারভিল এ কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করছেন, তাদের পালটা আক্রমণে মার খাচ্ছে ইউক্রেনীয়রা।

বিবিসির সাংবাদিক কুয়েন্টিন সমারভিল বলেছেন, আমরা এমন ফুটেজ দেখেছি যেগুলোতে দেখা গেছে ইউক্রেনীয় ট্যাংক ও পদাতিক সেনারা রাশিয়ার পরিখার কাছাকাছি অবস্থান নিচ্ছে। মনে হচ্ছে তারা কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করছে এবং ব্যর্থতার মুখেও পড়ছে। তিনি আরো বলেছেন, পালটা আক্রমণ কেমন চলছে তা বিচার করা খুব কঠিন। তাছাড়া কয়েক মাস ধরে যে আক্রমণ চলবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে তা নিয়ে এখনই মন্তব্য করা বোকামি হবে। সমারভিল বলছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার দখলের বিষয়টি বিবেচনায় নিলে জাপোরিজ্জিয়ার কৌশলগত গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে যায়। এখান থেকে রুশ দখল ক্রিমিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এখানে ইউক্রেন রুশদের হটিয়ে দিয়ে ক্রিমিয়া পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। কুয়েন্টিন সমারভিল বলেন, ফলে সেখানে রাশিয়ার অনেক সেনা মোতায়েন হয়েছে। কয়েক মাস ধরে তারা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাশিয়ার স্টর্ম জেড ইউনিটের এক সেনা, যার কল সাইন আলি রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছিলেন, ইউক্রেনীয় সেনারা লবকোভ গ্রামে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। এখানে তাদের অন্তত ২০টি সামরিক যান ও ১০০ পদাতিক সেনা ছিল। কিন্তু তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। আর রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল সের্গেই শোইগু বলেছিলেন, প্রায় দেড় হাজার সেনা নিয়ে ইউক্রেন হামলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শত্রুদের অগ্রগতি ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার তিনি দাবি করেছিলেন, গত তিন দিনে রুশ বাহিনীর হামলায় ৩ হাজার ৭০০ সেনা নিহত বা আহত হয়েছে।


এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ প্রত্যাশিত পালটা আক্রমণ শুরু করেছে ইউক্রেনীয় সেনারা এবং প্রতিরক্ষা লাইন উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ইউক্রেনের পালটা হামলা নিয়ে শুক্রবার রাশিয়ার সোচি শহরে প্রথম বার এমন বিরল মন্তব্য করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউরোশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পুতিন। এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবেই বলতে পারছি হামলা শুরু হয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর সামরিক রসদ ব্যবহার দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে।’ এ বিষয়ে বিশদ বিবরণ না দিয়ে পুতিন আরো দাবি করেন, ‘ইউক্রেনীয় সেনারা যে লক্ষ্যে এই অভিযান শুরু করেছে, তা এখনো অর্জিত হয়নি। তারা রুশ বাহিনীর কাছে বারবার মার খাচ্ছে। তীব্র লড়াইয়ে প্রতি তিন জন ইউক্রেনীয় সেনার বিপরীতে প্রাণ হারাচ্ছেন একজন রুশ সেনা।’

প্রতীক্ষিত পালটা আক্রমণ শুরু হয়েছে কিনা, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি কিয়েভ। কিন্তু রুশ নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি অঞ্চলে হামলার ঘটনা বেড়েছে। গত কয়েক দিনে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় ফ্রন্ট লাইনে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ছে রুশ বাহিনী। কিয়েভে থাকা আল জাজিরার প্রতিবেদক জোনাহ হুল বলেছেন, আপনি দেখেছেন জেলেনস্কি তার যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত প্রশংসা করছেন। হতাহতের ফলাফল নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। কিন্তু পালটা আক্রমণ শুরু হয়েছে কিনা, এ নিয়ে মুখ খুলছেন না তিনি। মস্কো দাবি করেছে, ইউক্রেনীয়রা জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা লাইন ভেঙে ফেলতে বারবার চেষ্টা করেছে এবং দক্ষিণে সরবরাহ লাইন কাটার চেষ্টা করেছে ইউক্রেনীয়রা। রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণ শুরু হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ)। টুইটে এই থিংক ট্যাংকটি বলেছে, ইউক্রেন জুড়ে বিভিন্ন ধরনের সামরিক কর্মকাণ্ড ইঙ্গিত করছে যে আক্রমণ চলছে। এ বিষয়ে শুক্রবার সকালে ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছে রুশ বাহিনী। যদিও যুদ্ধের কেন্দ্রস্থল এখন দোনেস

্কে। লিম্যান, বাখমুত, আভদিভকা এবং মারিঙ্কায় ভারী লড়াই চলছে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫