|
প্রিন্টের সময়কালঃ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৬:২০ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০৮ অপরাহ্ণ

ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা


ক্যালেন্ডার মেনে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা


অনলাইন ডেস্ক:-

 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)-এর চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন।
 

তিনি বলেন, “বিসিএস হলো সরকারি চাকরিতে প্রবেশের মূল দ্বার। যারা এই পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হবে, তারাই ভবিষ্যতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। কাজেই এ পর্যায়ে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা বা বিলম্ব ঘটে, তাহলে তার প্রভাব গোটা প্রশাসনিক কাঠামোর ওপর পড়ে। তাই পরীক্ষার সময়সূচি সুনির্দিষ্ট করে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পরীক্ষা ও নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করা অত্যন্ত জরুরি।”
 

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, পরীক্ষার স্বচ্ছতা ও মানোন্নয়নে পিএসসিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। তিনি বলেন, “যে সমস্যাগুলো রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধান করতে হবে। সংস্কার ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য নিয়োগব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। যারা আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ন্যায্যতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।”
 

বৈঠকে পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম কমিশনের কর্মকৌশল তুলে ধরেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে কমিশন পাঁচ বছরের একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে, যার আওতায় প্রতিবছর নভেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষা ও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কমিশনের আর্থিক ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।
 

কমিশনের সদস্যরা বৈঠকে জানান, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক প্রভাব ও হস্তক্ষেপের কারণে বিসিএস পরীক্ষার নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। প্রশ্নফাঁস, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মতো ঘটনা কমিশনের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কমিশনে সংস্কার কার্যক্রম চালানো হয়েছে, যাতে এই ধরনের অনিয়ম আর কখনো ফিরে না আসে।
 

তারা বলেন, এখন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে শুরু করে পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশের প্রতিটি ধাপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নের মানও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করা হচ্ছে, যাতে চাকরিপ্রত্যাশীরা বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির মাধ্যমে কেবল জাতীয় পর্যায়েই নয়, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায়ও নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারেন।
 

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে, পিএসসি কেবল পরীক্ষার স্বচ্ছতা রক্ষা করবে না, বরং প্রশাসনে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, “একটি বিশ্বাসযোগ্য নিয়োগব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে। প্রশাসন শক্তিশালী হবে, আর রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।”
 

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া, পিএসসি সদস্য মো. সুজায়েত উল্যা, মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, অধ্যাপক ড. এম সোহেল রহমান, অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. শাহনাজ সরকার এবং পিএসসি সচিবালয়ের সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া।
 

সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টা পুনর্ব্যক্ত করেন যে, পিএসসি যেন তরুণ প্রজন্মের আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, “একবার যদি এন্ট্রি পয়েন্টে আস্থা তৈরি হয়, তাহলে পুরো ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরবে। আর আস্থা ফিরলেই রাষ্ট্র আরও কার্যকর, জবাবদিহিমূলক ও জনগণের সেবামুখী হয়ে উঠবে।”


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫