|
প্রিন্টের সময়কালঃ ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:০৭ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৩:১০ অপরাহ্ণ

ফেব্রুয়ারিতে দেশব্যাপী বিএনপির কর্মসূচি


ফেব্রুয়ারিতে দেশব্যাপী বিএনপির কর্মসূচি


ঢাকা প্রেস নিউজ

 

আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতকরণ ও গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে মাঠে থাকবে বিএনপি। দলটি ঢাকাসহ সারাদেশে দুই ধাপে সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে। খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মসূচির চূড়ান্ত সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে। সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

 

বৈঠকে ছাত্রদের প্রস্তাবিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের খসড়া পর্যালোচনা করা হয়। বিএনপি নেতারা জানান, ছাত্রদের পাঠানো খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং দলটির কিছু প্রশ্ন থাকলেও এটি পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করা হয়নি। বরং বাস্তবতার নিরিখে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

বৈঠকে নেতারা বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত নির্বাচন অপরিহার্য। বিগত দেড় দশকে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, জনগণ তাদের ভোটাধিকার হারিয়েছে। তিনটি সংসদ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং সরকারকে নির্বাচনের জন্য চাপে রাখতে বিএনপি কর্মসূচি পরিচালনা করবে।
 

এছাড়া, রমজানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জনগণের ভোগান্তির আশঙ্কা প্রকাশ করেন নেতারা। মার্চের শুরুতেই রমজান শুরু হওয়ায়, ফেব্রুয়ারিতেই কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি মাঠে নামছে। দলটির কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় নেতারা শিগগিরই কর্মসূচি চূড়ান্ত করবেন। মূলত রমজান শুরুর আগেই এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে এবং রমজানের পর পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে পারে।

 

গত কয়েক মাস ধরে বিএনপি নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছে। দলটির শীর্ষ নেতারা মনে করেন, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। তাদের মতে, সরকারের ঘোষিত সময়সীমা— চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত— অত্যধিক দীর্ঘ। ন্যূনতম সংস্কার করেই জুলাই-আগস্টে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের কোনো সুযোগ নেই, তবে প্রয়োজন হলে সংশোধন ও পরিবর্তন করা যেতে পারে। ছাত্রনেতারা ঘোষণাপত্রে বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা বিএনপির দৃষ্টিতে অযৌক্তিক। বিএনপি মনে করে, মহান মুক্তিযুদ্ধই বাংলাদেশের ভিত্তি এবং এর পরবর্তী অর্জনগুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
 

জানা গেছে, বিএনপি ছাত্রদের খসড়া ঘোষণাপত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনেছে এবং এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে দ্রুতই স্থায়ী কমিটির আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সংশোধিত খসড়া যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোর মতামত নিয়েই চূড়ান্ত করা হবে। পরবর্তী সময়ে সরকার আলোচনার আহ্বান জানালে বিএনপি শরিকদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত খসড়া উপস্থাপন করবে।

 

ছাত্রদের ঘোষণাপত্রে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকারিতার কথা বলা হয়েছে, যা বিএনপির মতে বাস্তবসম্মত নয়। দলটির মতে, প্রায় ছয় মাস পর ব্যাকডেট দিয়ে এটি কার্যকর ঘোষণা করা হাস্যকর হবে। বিএনপি এটিকে ‘প্রোক্লেমেশন’ নয়, বরং ‘ডিক্লারেশন’ হিসেবে বিবেচনা করার পক্ষে রয়েছে এবং এটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণা করা উচিত।

 


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫