৫৯০ দিন পর ভারতের প্রসিদ্ধ ইসলাম প্রচারক মাওলানা কালিম সিদ্দিকি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার (৪ মে) সন্ধ্যায় জেল থেকে বের হওয়ার পর তাঁকে স্বাগত জানান তাঁর আইনজীবী উসামা নদভি। এলাহাবাদ হাইকোর্টের জামিন মঞ্জুরের এক মাস পর তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এর আগে ২০২১ সালের গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে মাওলানা কালিম সিদ্দিকিকে ‘ধর্মান্তর বিরোধী আইনে’ আটক করে ভারতের উত্তর প্রদেশের অ্যান্টি টেরর স্কোয়াড (এটিএস)। এরপর গত ৫ এপ্রিল শর্তাসাপেক্ষে তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।
মাওলানা কলিম সিদ্দিকির কাছে বিশ্বের অসংখ্য মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে। ১৯৯৩ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙায় অংশ নেওয়া বলবীর সিং (মুহাম্মদ আমির) তাঁর কাছে ইসলাম গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে মুহাম্মদ আমির এক মসজিদ ভাঙার ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক শ মসজিদ নির্মাণ ও রক্ষায় কাজ করার ইচ্ছা করেন। এরপর মৃত্যুর আগের ২৭ বছরে তিনি ৯১টি মসজিদ নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করেন।
মাওলানা কালিম সিদ্দিকি ১৯৫৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগর জেলার ফুলাতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হাজি মুহাম্মদ আমিন ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনেতা মাওলানা মাহমুদ হাসান দেওবন্দির শিষ্য। মাওলানা সিদ্দিকি ফুলাতের তৎকালীন ফয়জুল ইসলাম মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেরুত কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি সর্বভারতীয় প্রি মেডিকেল টেস্টে অংশ নিয়ে পুরো ভারতে ৫৭তম স্থান অর্জন করেন। কিন্তু এমবিবিএস ভর্তি না হয়ে তিনি বিশ্বখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা আবুল হাসান আলি নদভি (রহ.)-এর সান্নিধ্যে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন।
এ সময়ে তিনি দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামায় পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি ইসলামী শিক্ষা প্রচার কাজ শুরু করেন। তাঁর রচিত ‘আপ কি আমানাত আপকি সেওয়া মেঁ’ বইটি ভারতসহ সারাবিশ্বে সমাদৃত। বর্তমানে তিনি দি গ্লোবাল পিস সেন্টারের চেয়ারম্যান এবং জামিয়া ইমাম ওয়ালিউল্লাহ ট্রাস্টের প্রধান।