প্রকাশকালঃ
১৫ জুন ২০২৩ ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ ২৩৭ বার পঠিত
মানুষের সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করা, সুযোগ পেলে তার ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করা জঘন্য অপরাধ। বিশেষ করে ঈমানদারদের সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করা আত্মঘাতী। কারণ ঈমানদারের সঙ্গে শত্রুতা করা, তার ওপর আঘাত করার চেষ্টা করা মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করে দেয়। হাদিস শরিফে ঈমানদারকে গালি দেওয়ার ব্যাপারে পর্যন্ত সতর্ক করা হয়েছে, যেটাকে সাধারণত খুব হালকা চোখে দেখা হয়।
আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো মুসলিমকে গাল দেওয়া ফাসিকি কাজ (জঘন্য পাপ) আর কোনো মুসলিমকে হত্যা করা কুফরি। (বুখারি, হাদিস : ৭০৭৬)
যারা ঈমানদারের ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তারা নবীজি (সা.)-এর অভিশাপে অভিশপ্ত। প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪১)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, কেউ অন্যের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। কেউ অযৌক্তিকভাবে কারো বিরোধিতা করলে আল্লাহ তার বিরোধী হবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)
আল্লাহর কিছু কিছু বান্দা এমন আছে, যাদের সঙ্গে শত্রুতা করা, তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করা, আল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার নামান্তর। অর্থাৎ এ ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়া মানে নিজের ওপর চূড়ান্ত বিপদ ডেকে আনা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ওলি হলেন আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও মুমিনরা, যাঁরা বিনয়াবনত হয়ে নামাজ আদায় করেন ও জাকাত দেন।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৫৫)
সাইদ ইবনে জুবাইর (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহর ওলি কারা?’ মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যাদের দেখলে আল্লাহর কথা মনে হয়।’ (ইবনে মাজাহ, ইবনে কাসির)
আল্লাহর ওলিদের সবচেয়ে বড় গুণ হলো, তারা সর্বাবস্থায় আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে, যেকোনো পরিস্থিতিতে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দেওয়ার মানসিকতা রাখে। আল্লাহর আদেশের সামনে দুনিয়ার কোনো জিনিসের সঙ্গে যারা আপস করে না।
পবিত্র কোরআনে তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যাদের মানুষ বলেছিল যে ‘নিশ্চয়ই লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছে। সুতরাং তাদের ভয় করো।’ কিন্তু তা তাদের ঈমান বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল, ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক!’ অতঃপর তারা ফিরে এসেছে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ামত ও অনুগ্রহসহ। কোনো মন্দ তাদের স্পর্শ করেনি এবং তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছিল। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৭৩-১৭৪)
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ ধরনের অকল্যাণকর কাজ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন