প্রকাশকালঃ
১৫ জুলাই ২০২৪ ০৪:৪৪ অপরাহ্ণ ৪৭৩ বার পঠিত
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অন্যতম ফরজ ইবাদত। পবিত্র কুরআনে ৮২ বার সালাত বা নামাজের কথা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তোমরা সালাত (নামাজ) পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে, তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)।
আবার হাদিসেও একাধিকবার নামাজ আদায়ের কথা এসেছে। সেই সঙ্গে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ওয়াক্তমতো নামাজ আদায়ের ওপরও। এমনকি খোদ মহান আল্লাহর কাছেও যথাসময়ে সালাত আদায় করা অধিক প্রিয় আমল। আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, যথাসময়ে সালাত আদায় করা। ইবনু মাসঊদ (রা.) পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, এরপর পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার। ইবনু মাসঊদ (রা.) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? রাসুল (সা.) বললেন, এরপর আল্লাহর পথে জিহাদ বা জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ্। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০২)
এ ক্ষেত্রে নামাজের প্রাণ মনোযোগ ও একাগ্রতা। তবে নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে যদি কেউ হেঁটে যায় তবে সেই ব্যক্তির মনোযোগ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে, বিশেষ করে মসজিদে ফরজ নামাজের পর সুন্নত আদায়ের ক্ষেত্রে এমনটা প্রায়ই দেখা যায়। শরিয়তে এমনটা করায় নিষেধ রয়েছে। বুসর ইবনু সা’ঈদ (রহ.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যদি মুসল্লির সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী জানতো এটা তার কত বড় অপরাধ, তাহলে সে মুসল্লির সামনে দিয়ে অতিক্রম করার চাইতে চল্লিশ দিন/মাস/বছর দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম মনে করতো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৮৬)
তবে কারও নামাজ শেষ হয়ে গেলে তিনি যদি পেছনে কোনো মুসল্লিকে নামাজরত অবস্থায় পান, সে ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো তার সামনে হাওদার (উটের পিঠে বসার কাঠবিশেষ) এর সমপরিমাণ কোনো বস্তু রাখা। হাদিসে এসেছে, আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নারী, গাধা ও কুকুর সামনে দিয়ে গেলে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়। এটি থেকে রক্ষার উপায় হলো, মুসল্লির সামনে হাওদার কাঠ পরিমাণ কোনো বস্তু রাখা। (সহিহ মুসলিম, ১০২২)
অপর হাদিসে এসেছে, আবূ যার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ সালাতে দাঁড়াবে, তখন তার সম্মুখে হাওদার (উটের পিঠে বসার কাঠবিশেষ) পেছনের কাঠ পরিমাণ কোনো বস্তু রেখে দেবে। যদি এরূপ কোনো বস্তু না থাকে, তবে তার সম্মুখ দিয়ে বোকা স্ত্রীলোক ও কালো কুকুর গমন করলে ওই ব্যক্তির নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১০২০)
এ ক্ষেত্রে সর্বোত্তম পন্থা হলো জামাত শেষ হওয়ার পর মসজিদের খুঁটি বা পিলার কিংবা কোনো বস্তু সামনে রেখে বাকি নামাজ আদায় করা। খোদ রাসুল (সা.) ও এমনটি করতেন। ইয়াযিদ ইবনু আবূ উবায়দা (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি সালামা ইবনুল আকওয়া (রা.) এর কাছে আসতাম। তিনি সর্বদা মসজিদে নববীর সেই স্তম্ভের কাছে নামাজ আদায় করতেন যা ছিল মাসাহাফের নিকটবর্তী। আমি তাকে বললাম, হে আবূ মুসলিম! আমি আপনাকে সর্বদা এই স্তম্ভ খুঁজে বের করে সামনে রেখে সালাত আদায় করতে দেখি, এর কারণ কি?। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে এটি খুঁজে বের করে এর কাছে সালাত আদায় করেত দেখেছি। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৭৮)