ঢাকা প্রেস,বিশেষ প্রতিনিধি (কুষ্টিয়া):-
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীর দুটি বালুমহালের দখল নিয়ে সংঘর্ষে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব দেখা গেছে। এসময় ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে, এবং ১৮টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও ৬টিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। মঙ্গলবার ভেড়ামারার ফেরিঘাট বালুমহাল ও মসলেমপুর ১২ মাইল বালুঘাট এলাকায় এই সহিংসতা ঘটে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভেড়ামারা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সশস্ত্র মহড়া ও উত্তেজনা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে। হামলায় পাঁচজন আহত হন। দুপুর ১২টার দিকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলযোগে ফেরিঘাট বালুমহালে প্রবেশ করে এবং ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বালু ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে, সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি শহীদুল ইসলামের ভাতিজা জহুরুল ইসলাম বিজলী বলেন, "আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম চুনুর নামে এই ঘাট ছিল এবং জাকিরুল নামের আরেক নেতা টাকা সংগ্রহ করতেন। রোকনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এই ঘাট দখল নিতে হামলা চালিয়েছে।"
বিএনপি নেতা বিপ্লব মালিথা জানান, "প্রত্যেক সন্ত্রাসীর হাতে নাইন এম এম পিস্তল, শটগান ও দোনলা বন্দুক ছিল এবং তারা প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে।"
এরপর, সন্ত্রাসীরা ফেরিঘাট থেকে পাশের ১২ মাইল বালুঘাট দখল করতে যায় এবং একই ধরনের তাণ্ডব চালায়। সেখানে বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম বিশু ও তার ছেলে শামসুজ্জামান সবুজকে খুঁজতে থাকে এবং ১০ থেকে ১৫ রাউন্ড গুলি চালায়। আরও ৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও কিছুতে অগ্নিসংযোগ করে।
শামসুজ্জামান সবুজ অভিযোগ করেন, "বিএনপি নেতা তৌহিদুল ইসলামের নির্দেশে রোকন ও উজ্জ্বলের নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে দুই ব্যবসায়ী আহত হন এবং আমার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।"
তবে তৌহিদুল ইসলাম এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমি সরকারের কাছ থেকে বৈধ ইজারা নিয়ে কাজ করছি। অভিযোগকারী দল নিজেরাই অবৈধভাবে বালুমহাল পরিচালনা করছে। আমার ৪৭ বছরের রাজনৈতিক জীবন ধ্বংস করতে এসব ষড়যন্ত্র করছে।"
ভেড়ামারা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, "পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"