|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০১:২৫ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০২:০০ অপরাহ্ণ

বিভক্ত সমাজের প্রতিচ্ছবি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা: রেহমান সোবহান


বিভক্ত সমাজের প্রতিচ্ছবি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা: রেহমান সোবহান


ঢাকা প্রেস নিউজ

 

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, "যদি ঢাকা ক্লাব বা গুলশান ক্লাবের সদস্যদের ওপর জরিপ করা হয়, তাহলে দেখা যাবে, শতভাগ সদস্যই তাদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করান। নব্বই দশকে যারা বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন, তারা এখন সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি করছেন। বর্তমানে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীও ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে তাদের সন্তানদের পড়াতে আগ্রহী। ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে, এবং এর পেছনে কাজ করছে মার্কেট মেকানিজম। এর ফলস্বরূপ, সমাজ এখন বিভক্ত হয়ে পড়েছে, এবং এই বিভক্ত সমাজের প্রতিচ্ছবি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা। এখান থেকেই বৈষম্যের শুরু হয়েছে।"
 

এ কথাগুলো তিনি গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘শিক্ষার হালচাল ও আগামীর ভাবনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান। ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশন (সিএএমপিই) এ আয়োজনটি করে।
 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শারমিন্দ নিলোর্মী প্রমুখ। এছাড়া সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কনসালটেশন কমিটির আহ্বায়ক ড. মনজুর আহমদ এবং সিএএমপিইর উপপরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
 

অধ্যাপক রেহমান সোবহান আরও বলেন, "দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপীয় সমাজে আমাদের বর্তমান সমাজের মতো অনেক বৈষম্য ছিল। তবে যুদ্ধের পর ইউরোপীয় দেশগুলো বৈশ্বিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও একজন বাসচালকের সন্তান একই ধরনের শিক্ষা পেত। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশও একই পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাতেও সবার জন্য সমান বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।"
 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, "বিভিন্ন দল তাদের নিজস্ব সমস্যাগুলো নিয়ে আসে, এবং তাদের দাবিগুলো অনেক সময় সাংঘর্ষিক হয়। এক দলের দাবি মেনে নিলে অন্য দল অসন্তুষ্ট হয়, যার ফলে সমাধান খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়। তবে আমি কিছু আমলাকে খুঁজে পেয়েছি, যারা প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছেন। তারা সরকারের পক্ষে যা সম্ভব, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন, এবং তাদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।"
 

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, "দেশের মাদ্রাসাগুলোকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আইন রয়েছে, তাহলে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কেন নয়? মাদ্রাসাগুলোকে রেজিস্ট্রেশনের মধ্যে আনলে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়াগুলো আরও ভালভাবে তুলে ধরা যাবে। তাদের ক্লাসরুমের বাইরেও অনেক কাজ করতে হয়, তাদের বোঝা কমাতে হবে।"


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫