মর্মান্তিক নির্যাতনের পরও যাদের ক্ষমা করেছিলেন মহানবী (সঃ)

প্রকাশকালঃ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:৪৯ অপরাহ্ণ ২০৪ বার পঠিত
মর্মান্তিক নির্যাতনের পরও যাদের ক্ষমা করেছিলেন মহানবী (সঃ)

হুদের ময়দানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাঁত মোবারক শহীদ হয়েছিল এবং মুসলমানরা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিল। দিনটি অবশ্যই মহানবী (সা.)-এর জীবনে এবং ইসলামের ইতিহাসে খুব কষ্টের দিন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দৃষ্টিতে তাঁর জীবনে এই দিনের চেয়েও বেশি কষ্টের দিন ছিল। সে বিষয়ে হাদিসে এসেছে, তায়েফ সফর বিষয়ে আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, ‘অহুদের দিনের চেয়ে কি বেশি কষ্টের দিন আপনার জীবনে এসেছিল? জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ।

তোমার জাতির কাছ থেকে যে কষ্ট পেয়েছি তার চেয়ে সেটি বেশি কষ্টদায়ক ছিল। আর তা ছিল আকাবার (তায়েফের) দিনের আঘাত। যেদিন আমি (তায়েফের নেতা) ইবনু আবদে ইয়ালিল বিন আবদে কুলালের কাছে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে তাতে সাড়া দেয়নি। তখন দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ফিরে আসার পথে কারনুস সাআলিব (কারনুল মানাজিল) নামক স্থানে পৌঁছার পর কিছুটা স্বস্তি পেলাম।


ওপরের দিকে মাথা তুলে দেখলাম একখণ্ড মেঘ আমাকে ছায়া করে আছে। অতঃপর ভালোভাবে লক্ষ্য করলে সেখানে জিবরাইলকে দেখলাম। তিনি আমাকে সম্বোধন করে বলেন, আপনি আপনার জাতির কাছে যে দাওয়াত দিয়েছেন এবং জবাবে তারা যা বলেছে, মহান আল্লাহ সবই শুনেছেন। এক্ষণে তিনি আপনার কাছে ‘মালাকুল জিবাল’ (পাহাড়ের নিয়ন্ত্রক) ফেরেশতা পাঠিয়েছেন। 


ওই লোকদের ব্যাপারে তাকে আপনি যা খুশি নির্দেশ দিতে পারেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, অতঃপর মালাকুল জিবাল আমাকে সালাম দিয়ে বলেন, হে মুহাম্মদ, আল্লাহ আপনার জাতির কথা শুনেছেন। আমি মালাকুল জিবাল। আপনার পালনকর্তা আমাকে আপনার কাছে পাঠিয়েছেন, যাতে আপনি আমাকে যা খুশি নির্দেশ দিতে পারেন। আপনি চাইলে আমি ‘আখশাবাইন’ (মক্কার আবু কুবায়েস ও কুআইকাআন) পাহাড় দুটিকে তাদের ওপর চাপিয়ে দেব। 

জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বরং আমি আশা করি, আল্লাহ তাদের ঔরসে এমন সন্তান জন্ম দেবেন, যারা এক আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৩২৩১) ক্ষমা ও সহিষ্ণুতার কী অনুপম দৃষ্টান্ত! রাসুলুল্লাহ (সা.) মর্মান্তিক নির্যাতনের শিকার হয়েও তায়েফবাসীকে ক্ষমা করে দেন। ফেরেশতার সাহায্য পেয়েও তিনি তাদের ওপর প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। আমরা কি আমাদের জীবনে এ ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি না?