ব্যাটারিচালিত রিকশায় নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন

প্রকাশকালঃ ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৩:২০ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
ব্যাটারিচালিত রিকশায় নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

বাংলাদেশের জনপ্রিয় বাহন রিকশা সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইলেকট্রনিক উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছে। চিরাচরিত রিকশায় যুক্ত হয়েছে ব্যাটারির গতি, যা বাহনটিকে আরও সাশ্রয়ী ও আধুনিক করেছে। এবার নতুন এক প্রযুক্তি রিকশাচালকদের জীবন আরও সহজ করতে আসছে, যার প্রবর্তন করেছে চীনের দুই শিক্ষার্থী, নিকোল মাও (৩৩) এবং ইওয়েই ঝু (৩২)।
 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই স্নাতক করোনা মহামারির সময় বাংলাদেশে আটকা পড়েছিলেন এবং তখনই বাংলাদেশে ব্যাটারি ব্যবসা শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। নিকোল মাওয়ের পরিবার চীনে একটি ব্যাটারি কোম্পানি পরিচালনা করত, যা তাদের এই নতুন উদ্যোগে সহায়তা করে। তাদের স্টার্টআপ ‘টাইগার নিউ এনার্জি’ এখন রিকশাচালকদের জন্য একটি ব্যাটারি বদলানোর নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, যা চালকদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় করবে।
 

বর্তমানে এই স্টার্টআপ বাংলাদেশের দ্রুততম বৃদ্ধি পাওয়া উদ্যোগগুলোর মধ্যে একটি। তাদের লক্ষ্য, আগামী বছর এক হাজার ব্যাটারি-সোয়াপিং স্টেশন স্থাপন করা, যা বাংলাদেশের লক্ষাধিক বৈদ্যুতিক রিকশাকে সেবা দেবে। এই স্টেশনগুলোতে চালকেরা নির্দিষ্ট ফি দিয়ে কম সময়ে বেশি ট্রিপ দিতে পারবেন, যা তাদের আয়ের পরিমাণও বাড়াবে।
 

মাও এবং ঝু লক্ষ্য করেছেন যে, ঢাকাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য শহরে বৈদ্যুতিক রিকশার চাহিদা বাড়ছে। ভারতের ‘টুকটুক’ বা থাইল্যান্ডের তিন চাকার যানগুলোর মতো নয়, বাংলাদেশের তিন চাকার রিকশাগুলো মূলত বৈদ্যুতিক। কিন্তু এসব বৈদ্যুতিক রিকশার ব্যাটারি চার্জ করতে দীর্ঘ সময় লাগে, আর ব্যবহৃত সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারির পরিবেশগত ক্ষতি আছে। এখানেই তারা সম্ভাবনা দেখতে পান এবং নতুন এই উদ্যোগ শুরু করেন।
 

তাদের তৈরি লিথিয়াম ব্যাটারি সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারির তুলনায় বেশি মাইলেজ এবং দীর্ঘমেয়াদি। তবে চালকদের অনেকেই একবারে ৪০০ ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৪৮,০০০ টাকা) খরচ করতে না পারায় তারা ব্যাটারি-সোয়াপিং পদ্ধতি চালু করেন। এই পদ্ধতিতে, চালকেরা যখন ব্যাটারির চার্জ কমে যেতে দেখেন, তখন তারা স্বয়ংক্রিয় স্টেশনে গিয়ে ব্যাটারি বদল করতে পারেন। ব্যাটারি বদলানোর সময় ভয়েস নির্দেশনা প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ করে দেয়।
 

ফিলিপাইনের এডিবি ভেঞ্চারস এবং সিঙ্গাপুরের ওয়েভমেকার পার্টনার্সের কাছ থেকে প্রাথমিক বিনিয়োগ সংগ্রহ করে এই উদ্যোগটি চট্টগ্রামে প্রথম ১০০টি ব্যাটারি-সোয়াপিং স্টেশন স্থাপন করেছে। তিন বছরের মধ্যে, এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বাংলাদেশের বৈদ্যুতিক রিকশার জগতে বিপ্লব ঘটানোর লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে।