|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫০ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:১৩ অপরাহ্ণ

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ ৪৮ ঘন্টার আন্দোলনে বাড়ছে মানুষের ঢল


‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ ৪৮ ঘন্টার আন্দোলনে বাড়ছে মানুষের ঢল


আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-



  
তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা পাড়ের ১৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে যোগ দিচ্ছেন ৫ জেলার মানুষ।


 


 

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে রংপুর জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন চর পয়েন্টে আসতে শুরু করেছে এই অঞ্চলের মানুষ।

 

 

এদিন একই সঙ্গে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি।

 



টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
 

মূল সমাবেশ দুপুর দুইটা থেকে শুরু হয়ে এই অবস্থান কর্মসূচি টানা ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত পালন করা হবে। এর মাধ্যমে তিস্তাপাড়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগসহ বিশ্ব পরিমন্ডলে তিস্তার দুঃখ তুলে ধরা হবে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার বুকে মঞ্চ তৈরিসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
 

শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা এক কাতারে শামিল হয়েছেন শুকিয়ে যাওয়া তিস্তাকে রক্ষার দাবিতে।
 

সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের চোখে-মুখে ধরা পড়েছে ক্ষোভ আর আশার এক অদ্ভুত মিশেল। একদিকে নদী মৃত্যুর প্রহর গুণছে, অন্যদিকে এরই মধ্যে জেগে উঠেছে জনতার অদম্য সংহতি।
 

সমাবেশে আসা তিস্তাপাড়ের জেলে এনামুল হক জানান, বাপ দাদারা তিস্তা নদীতে সারা বছর মাছ ধরত। তিস্তা নদীর শুঁটকি সারা দেশে চলে যেত। এখন বর্ষার ২/৩ মাস মাছ ধরতে পারলেও বাকি সময় পরিবারের খাবার যোগানো কষ্ট হয়ে পড়ে। পানি না থাকায় অনেক জেলে তাদের পেশার পরিবর্তন করেছেন। আগের মত নেই তিস্তা নদীতে মাঝি মাল্লাদের ডাক হাক। তিনিও দাবি করেন দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে।
 

সমাবেশে যোগ দিতে আসা রংপুরের কাউনিয়ার তিস্তাপারের বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা একটি প্রকল্প ছিল। বিগত সরকার গড়িমসি করে তা বাস্তবায়ন করেনি। বর্ষার সময় ভারত পানি দিয়ে আমাদের ডুবিয়ে দেয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করতে পারি না। আমরা তিস্তার পানির সমান অধিকার চাই।
 

তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও নদীর প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে পূর্বঘোষিত দুইদিনের কর্মসূচিতে থেকে শুরু হয়েছে। ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচিতে অংশ নিবেন বিএনপি ও তার মিত্ররা। রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার সর্বস্তরের জনগণ তিস্তা অভিমুখে পদযাত্রা এবং নদীর দুই তীরে ২৩০ কিলোমিটার জুড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
 

আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এর মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর বাজার সংলগ্ন তিস্তা নদীর বুকে রংপুরের কর্মসূচি পালিত হবে।
 

জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ৫ জেলার ১১টি পয়েন্টে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংহতি জানাতে তিস্তাপাড়ে এসেছেন।
 

পদযাত্রার বিভিন্ন স্পটগুলোতে পৃথক পৃথকভাবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন- বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫