|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১২ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ১৮ মে ২০২৩ ০৬:২৪ অপরাহ্ণ

দুই দিনে ব্যাপক বিক্রি, আপাতত বন্ধ গ্রামীণ ইউনিক্লোর সব বিক্রয়কেন্দ্র


দুই দিনে ব্যাপক বিক্রি, আপাতত বন্ধ গ্রামীণ ইউনিক্লোর সব বিক্রয়কেন্দ্র


জ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিক্লোর সায়েন্স ল্যাবরেটরি বিক্রয়কেন্দ্রে যান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার পরীক্ষা চলছে। এ জন্য ক্লিয়ারেন্স সেলের কথা জানলেও গত দুই দিন আসতে পারিনি। আজ এসে দেখি বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ।’

জান্নাতুল নাঈম আরও জানান, তাঁর মা গতকাল একবার গ্রামীণ ইউনিক্লোর এই বিক্রয়কেন্দ্রে এসেছিলেন। তবে অত্যধিক ভিড় দেখে কেনাকাটা না করেই ফিরে যান তিনি।

জানতে চাইলে গ্রামীণ ইউনিক্লোর বিপণন বিভাগের প্রধান শরিফুল ইসলাম আজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত দুই দিনে আমাদের বিক্রয়কেন্দ্রগুলোয় প্রচুর ক্রেতা আসেন। আমাদের সহকর্মীরা সবাইকে ভালোভাবে সেবা দিতে পারেননি। অনেকে পণ্য কিনতে না পেরে ফিরে গেছেন। তা ছাড়া ক্রেতাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টিও আমাদের নজরে এসেছে। গত দুই দিনেই আমাদের বিক্রয়কেন্দ্রে থাকা পণ্যের মজুত শেষ হয়ে যায়। সে জন্য আজ থেকে আমরা সাময়িক সময়ের জন্য বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ রেখেছি।’


শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমরা আমাদের ওয়্যারহাউসে (গুদাম) থাকা সব পণ্য বিক্রয়কেন্দ্রে বিক্রির জন্য আনব। প্রক্রিয়াটি শেষ হলে শিগগিরই আবার বিক্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে। এবার পণ্য শেষ হলে বিক্রয়কেন্দ্রগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।’

এক দশকের পথ চলায় গ্রামীণ ইউনিক্লো বর্তমানে বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের পরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর একটি। গত বৃহস্পতিবার হঠাৎই ব্র্যান্ডটির কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেয় ইউনিক্লো সোশ্যাল বিজনেস বাংলাদেশ লিমিটেড। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১৮ জুনের পর গ্রামীণ ইউনিক্লোর বিক্রয়কেন্দ্রগুলোর ফটক খুলবে না।


গ্রামীণ ইউনিক্লো বিবৃতিতে জানায়, ২০১০ সালে তাদের মূল প্রতিষ্ঠান ফাস্ট রিটেইলিং গ্রামীণ ব্যাংক গ্রুপের সঙ্গে যৌথভাবে পোশাক ব্যবসার মাধ্যমে সামাজিক সমস্যা, যেমন দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসা শুরু করে। ২০১৩ সালে ঢাকায় গ্রামীণ ইউনিক্লোর প্রথম বিক্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়। 


এতে আরও বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সে সঙ্গে ব্যবসায়িক পরিবেশ পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করছি, আমাদের ব্যবসার একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অর্জন করতে সফল হয়েছি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের ব্যবসার কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তবে গ্রামীণ ইউনিক্লো ব্যবসা বন্ধের প্রক্রিয়াটি শুরু করে গত বছরের নভেম্বর থেকে। তারই অংশ হিসেবে নভেম্বর থেকে গত এপ্রিল পর্যন্ত ছয় মাসে আটটি বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করা হয়। তার মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে একসঙ্গে চারটি বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ হয়। বন্ধ হওয়া আটটি বিক্রয়কেন্দ্র ছিল বসুন্ধরা শপিং মল, বেইলি রোড, জয়দেবপুর, সাভার, কাঁটাবন, এলিফ্যান্ট রোড, খিলগাঁও ও নারায়ণগঞ্জে।


বর্তমানে গ্রামীণ ইউনিক্লোর বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে যমুনা ফিউচার পার্ক, গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড, নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সড়ক, সায়েন্স ল্যাব, নরসিংদী, পুরান ঢাকার ওয়ারী, মোহাম্মদপুর রিং রোড, মেট্রো শপিং মল, যাত্রাবাড়ী ও মিরপুর ১২ এলাকায়।

জাপানভিত্তিক বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ইউনিক্লোর মূল প্রতিষ্ঠান ফাস্ট রিটেইলিং কোম্পানি।

তারা সামাজিক ব্যবসার অংশ হিসেবে গ্রামীণ ইউনিক্লো ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে। জাপানে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত ফাস্ট রিটেইলিং কোম্পানির ইউনিক্লো ছাড়াও জিইউ, থিউরি, পিএলএসটি, কোনতুয়া দি কোতুনিয়ে, প্রিন্সেস টম টম নামে পোশাকের ব্র্যান্ড রয়েছে। জাপান, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসব ব্র্যান্ডের বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৫৯২। গত ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া অর্থবছরে ফাস্ট রিটেইলিংয়ের আয় ছিল ১ হাজার ৭০৮ কোটি ডলার। এ সময় তাদের কর–পূর্ববর্তী মুনাফা ছিল ৩০৭ কোটি ডলার।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫