অর্থনৈতিক নানামুখী সংকটের মধ্যেও রেকর্ড মুনাফা করেছে সিঙ্গার

গ্যাস, বিদ্যুৎ, ডলার ও কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক নানামুখী সংকটের মধ্যেও রেকর্ড মুনাফা করেছে বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ। সংকটের মধ্যেও চলতি বছরের ছয় মাসে ৫৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। ছয় মাসের বিবেচনায় এক যুগের বেশি সময়ের মধ্যে চলতি বছরই সর্বোচ্চ মুনাফা করেছে কোম্পানিটি। তাতে স্বাভাবিক সময়ের ব্যবসা ও মুনাফার ধারায় ফিরেছে কোম্পানিটি।
সিঙ্গার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কয়েকটি কারণে বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটি ভালো মুনাফা করেছে। তার মধ্যে অন্যতম পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, বিশ্ববাজারে কিছু কাঁচামালের ও পণ্য পরিবহনের খরচ কমে যাওয়া। কোরবানির ঈদ ও অত্যধিক গরমে গত ছয় মাসে কোম্পানিটির বিক্রি বাড়াতে সহায়তা করেছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে গতকাল রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইলেকট্রনিকস খাতের কোম্পানিটি ১ হাজার ৯১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। তাতে সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর উল্লেখিত সময়ে মুনাফা দাঁড়ায় ৫৮ কোটি টাকা। ২০১০ সালের পর বছরের প্রথম ছয় মাসে এটিই কোম্পানিটির সর্বোচ্চ মুনাফা।
মুনাফা বৃদ্ধির এ খবরে ১০ মাস পর গতকাল সিঙ্গারের শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তর ভেঙে ওপরে উঠেছে। গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সাড়ে ৫ টাকা বা ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৭ টাকা ৪০ পয়সায়। দিন শেষে কোম্পানিটির প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের প্রায় সাড়ে ছয় লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির পণ্য বিক্রি বাবদ আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে। পণ্যমূল্য ও বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে কোম্পানিটি জানিয়েছে। আবার বিশ্ববাজারে কিছু কাঁচামালের দাম ও পরিবহন খরচ কমার সুফলও পেয়েছে সিঙ্গার। ২০২২ সালের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির আয়ের ৭৮ শতাংশই কাঁচামাল ও পণ্য পরিবহনের পেছনে খরচ হয়ে গিয়েছিল। কারণ, ওই সময় কাঁচামাল ও পরিবহন খরচ—দুই-ই বেশি ছিল। সেখানে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির মোট আয়ের ৭১ শতাংশ খরচ হয়েছে কাঁচামাল ও পণ্য পরিবহনে। এ ক্ষেত্রে কোম্পানিটির ৭ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় হয়েছে।
এদিকে কর-পূর্ববর্তী মুনাফা বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানির করও বেড়ে গেছে। এ কারণে কর-পরবর্তী মুনাফা কমেছে। ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে সিঙ্গার কর দিয়েছিল প্রায় ১৩ কোটি টাকা। সেখানে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কর পরিশোধ করেছে ৩০ কোটি টাকার বেশি। কোম্পানির সব ধরনের খরচ বাদ দেওয়ার পর যে মুনাফা থাকে, সেটি কর-পূর্ববর্তী মুনাফা। আর কর পরিশোধের কর যে মুনাফা থাকে, সেটিই কোম্পানির প্রকৃত মুনাফা।
রেকর্ড মুনাফার কারণ জানতে চাইলে সিঙ্গারের কোম্পানি সচিব কাজী আশিকুর রহমান বলেন, কোরবানি ও তীব্র দাবদাহের কারণে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে পণ্য বিক্রিতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ ছাড়া পরিবহন ও কাঁচামালের খরচও কিছুটা কমেছে। পাশাপাশি প্রতিযোগীদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্যের দামও বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে তার সুফল মিলেছে মুনাফায়।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫