বাজারে সবজি-চালের দামে স্বস্তির ইঙ্গিত

চালের বাজারে তেজ কমতে শুরু করেছে, পাশাপাশি সবজির দামেও নেমেছে উত্তাপ। সরবরাহ বাড়ায় বাজারে স্বস্তির হাওয়া বইছে। কিছু সবজির কেজি মূল্য ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
শুল্ক হ্রাস ও সরকারি উদ্যোগে চাল আমদানির ফলে সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে কেজিতে এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁও, মহাখালী ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নতুন ধান উঠলেও গত দুই মাস ধরে চালের বাজার ছিল চড়া। তবে এখন পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। খুচরা পর্যায়ে সরু বা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭২ থেকে ৮০ টাকায়, মাঝারি জাতের (বিআর-২৮, পায়জাম) চাল ৫৮ থেকে ৬৬ টাকায়, আর মোটা বা গুটি স্বর্ণা ও চায়না ইরি পাওয়া যাচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। ভারতীয় মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় এবং মোটা জাতের চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায়।
চাল আমদানিতে আগে ৬৩.২৫ শতাংশ শুল্ক–কর থাকলেও এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাত্র ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর রাখা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের অক্টোবরের আপডেট ও আউটলুক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের দ্রুত পদক্ষেপে চালের দাম নিম্নমুখী প্রবণতায় রয়েছে। আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে দাম প্রায় ১ শতাংশ কমেছে। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখনও মোটা ও সরু চালের দাম প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাজারে সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া নভেম্বরের মধ্যে আরও ৪ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। জরুরি ক্রয় প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মেয়াদ ২৭ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হয়েছে। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারের গুদামে ১৫ থেকে ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত ছিল। এসব উদ্যোগে চালের বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আউটলুক প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
কারওয়ান বাজারের জনতা রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী সৌরভ হোসেন বলেন, “ভারত থেকে আমদানি শুরু হওয়ায় চালের সরবরাহ বেড়েছে, ফলে দামে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।”
সবজির বাজারেও একই ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে অনেক সবজি ৬০ থেকে ৮০, এমনকি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হলেও বর্তমানে বেশির ভাগের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৮০–৯০ টাকায় (আগে ৯০–১০০), ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকায় (আগে ৭০–৮০), পটোল ৬০–৭০ টাকায় (আগে ৮০–৯০), উচ্ছে ৮০–১০০ টাকায়, ঝিঙে ৬০–৭০ টাকায় এবং মুলা ৪০–৪৫ টাকায়। ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০–৮০। কাঁচা পেঁপে ৩০–৩৫, বরবটি ১০০–১১০, লম্বা বেগুন ৮০–১০০, টমেটো ১০০–১১০ এবং শসা ৫০–৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের দাম স্থিতিশীল আছে—কেজি ১৪০ থেকে ১৭০ টাকায়।
আগারগাঁওয়ের সবজি ব্যবসায়ী সাইফুল মিয়া বলেন, “এখন বৃষ্টি নেই, মাঠ থেকে প্রচুর সবজি আসছে। সরবরাহ বাড়ায় দামও কমছে।”
দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫০–১৫৫ টাকায়, আর আমদানি মসুর ৯৫–১০৫ টাকায়। অন্যদিকে মুরগি, ডিম ও মাছের দামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায়নি।
👉 সংক্ষেপে:
সরকারি পদক্ষেপে চালের দাম কমছে, সরবরাহ বৃদ্ধিতে সবজির বাজারেও স্বস্তি ফিরছে। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমদানি অব্যাহত থাকায় আগামী সপ্তাহগুলোতেও দামের এই স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫