গাজায় ইসরায়েলি হামলা, গণহত্যার শুনানি শুরু আজ

গাজায় যুদ্ধবিরতির বৈশ্বিক দাবির মুখে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনে গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে আজ। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরের আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার করা এ মামলাকে স্বাগত জানিয়েছে অনেক দেশ।
গত ডিসেম্বর মাসে গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই দিনের এই শুনানিতে পক্ষে–বিপক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরা হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনে নৃশংস সামরিক হামলা বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ চাওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় ২৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ১০ হাজারের বেশি শিশু রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে জমা দেওয়া ৮৪ পাতার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৪৮ সালের গণহত্যার যে কনভেশন, তা লঙ্ঘন করেছে। ইসরায়েল ও দক্ষিণ আফ্রিকা দুটি দেশই জাতিসংঘের গণহত্যার কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ। এতে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আইনি সংস্থা আইসিজেতে বিরোধের নিষ্পত্তি পাওয়ার এখতিয়ার রয়েছে তাদের।
দক্ষিণ আফ্রিকার করা এই মামলায় সমর্থন দিচ্ছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। ৫৭ সদস্যের এই সংস্থায় সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান, মরক্কোর মতো দেশ গত ৩০ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকাকে সমর্থন জানিয়েছে। ২ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে সমর্থনের কথা জানানো হয়।
এ ছাড়া তুরস্ক, জর্ডান, বলিভিয়া, মালদ্বীপ, নামিবিয়া ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও সমর্থন জানানো হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে সমর্থন জানানো হয়েছে। বলিভিয়া বলেছে, এর আগে গত ৩০ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খানের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, কমোরোস ও জিবুতির সঙ্গে তারা ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে অনুরোধ জানায়।
অবশ্য এ মামলায় বিরোধিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কারবি ৩ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলাকে ‘মামলাটি অযৌক্তিক, বিপরীতমুখী ও সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন’ বলে মন্তব্য করেন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত (ইসরায়েলের) এমন কোনো কর্মকাণ্ড দেখিনি, যাকে গণহত্যা বলা যেতে পারে। গণহত্যা অবশ্যই জঘন্য একটি নৃশংসতা। তাই এই অভিযোগগুলো হালকা করা উচিত হবে না।’
গাজায় চলমান যুদ্ধ আঞ্চলিকভাবে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কার মধ্যে সম্প্রতি নতুন করে মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করেন ব্লিঙ্কেন। এর মধ্যে গতকাল বুধবার তিনি ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গতকাল সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রামাল্লা শহরে যান তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্লিঙ্কেন। রামাল্লায় যাওয়ার আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, আব্বাসের সঙ্গে তিনি বৈঠকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কার এবং তাদের শাসনব্যবস্থার উন্নয়নের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার কথা ভাবছেন।
মঙ্গলবার তেল আবিবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সমর্থন জুগিয়ে যাবে। তবে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আটকে পড়াদের সুরক্ষার জন্য আরও বেশি করে পদক্ষেপ নিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫