সড়ক অবরোধে অচল রাজধানী ও জেলা শহরগুলো, ভোগান্তি চরমে

ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। বুধবার সকাল থেকেই এ কর্মসূচি শুরু হয়, যা দুপুর গড়াতেই রাজধানীর তেজগাঁও-মগবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যানজটের ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ কয়েকটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাতরাস্তা এলাকায় অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। এতে তেজগাঁও-মগবাজার সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীরা বাধ্য হয়ে গাড়ি ছেড়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা দেন।
বিকেল ৩টার দিকে মগবাজার এলাকায় কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আদনান সালেহীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমার অফিস মহাখালীতে, তিনটায় ঢুকতে হয়। আড়াইটা থেকে গাড়িতে বসে আছি, জ্যাম কখন ছাড়বে কিছুই বুঝতে পারছি না। ভাবছি হেঁটেই চলে যাব।”
বাসচালক বাকের আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “কয়েক মাস আগে প্রতিদিন রাস্তায় অবরোধ ছিল। কিছুদিন শান্তি ছিলাম, এখন আবার শুরু হইছে। সব দাবির জন্য রাস্তা বন্ধ করা লাগে কেন, বুঝি না।”
পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগের অবস্থান
তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার রফিকুল ইসলাম জানান, “শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে চারদিকে সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। ট্রাফিক পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছাড়লেই যানচলাচল স্বাভাবিক হবে।”
গুলশান ট্রাফিক বিভাগ থেকে জানানো হয়, উত্তরা-বনানী-মহাখালী রুটে ইনকামিং যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তবে মহাখালী থেকে উত্তরা রুটে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যানজট এড়াতে বিকল্প রুট ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে আমতলী, গুলশান-১ ও শান্তা ডাইভারশন দিয়ে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
ঢাকার বাইরেও উত্তাল পরিস্থিতি
শুধু রাজধানী নয়, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ, বগুড়া, নওগাঁ, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া এবং খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায়ও একইভাবে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভে নেমেছে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি
শিক্ষার্থীদের মূল দাবিগুলো হলো:
১, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতি বাতিল: হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে এ পদোন্নতি বাতিল করতে হবে, নিয়োগপ্রাপ্তদের বরখাস্ত ও পদবি পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়েছে।
২, ডিপ্লোমা কোর্সে বয়সসীমা নির্ধারণ ও উন্নত কারিকুলাম: যেকোনো বয়সে ভর্তি বাতিল, উন্নত চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু এবং ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন।
৩, উপযুক্ত পদে নিয়োগ নিশ্চিত: উপসহকারী প্রকৌশলী পদের জন্য সংরক্ষিত সিটে ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থীদের বদলে নিচু পদের নিয়োগ বন্ধ ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা।
৪, কারিগরি সেক্টরে উপযুক্ত জনবল নিয়োগ: পরিচালক, উপসচিব, বোর্ড চেয়ারম্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূতদের নিয়োগ বন্ধ ও শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগ।
৫, স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় ও সংস্কার কমিশন: ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ নামে পৃথক মন্ত্রণালয় এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠনের দাবি।
৬, উচ্চশিক্ষার সুযোগ: পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্পন্ন টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডুয়েটের অধীনে ভর্তি নিশ্চিতকরণ।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫