মেহেরপুরে বিএনপিতে নির্বাচনী কোন্দল চরমে: চারজন মনোনয়নপ্রার্থী পরিবর্তনের দাবি
মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির ভেতরে কোন্দল চরমে পৌঁছেছে। জেলার দুই আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনয়নপ্রাপ্ত দুই নেতা ছাড়াও আরও চারজন নেতা মনোনয়ন ফরম তুলেছেন। তারা শেষ মুহূর্তে দলীয় সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আশা করছেন। তবে মনোনীত দুই নেতা জানাচ্ছেন, সবার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন।
মেহেরপুর-১ (সদর-মুজিবনগর) আসনের বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তাঁর ছোট ভাই ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন। একই দিনে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের প্রার্থী সাবেক এমপি আমজাদ হোসেনও ফরম তোলেন। পরদিন মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
মেহেরপুর-১ আসনে ২১ ডিসেম্বর মনোনয়ন ফরম তুলেছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান ও মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম। এ ছাড়া, সোমবার দুপুরে জেলা বিএনপির সদস্য ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মহাসচিব জাকির হোসেনের পক্ষে মনোনয়ন ফরম তোলা হয়েছে।
এ পর্যন্ত আসন দুটিতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে। তবে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী না থাকার কারণে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে। জামায়াতের প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।
বিএনপি সূত্র জানায়, জেলায় দলীয় রাজনীতি আগে থেকেই বিভক্ত। গত ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে সাবেক দুই এমপি মাসুদ অরুণ ও আমজাদ হোসেনকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি হন জাভেদ মাসুদ মিল্টন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান। নতুন কমিটির নেতাকর্মীরা সাবেক দুই এমপির পক্ষে আলাদা কর্মসূচি চালাচ্ছেন।
সূত্রের বরাতে জানা যায়, গত ১৮ অক্টোবর লন্ডন থেকে ফোনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুই এমপিকে যথাক্রমে মেহেরপুর-১ ও মেহেরপুর-২ আসনে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন। ৩ নভেম্বর দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদেরকে মনোনয়ন দেন। এর পর থেকে দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে।
দুটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনুসারীরা দলের অফিসে ভাঙচুর, মোটরসাইকেল ও আসবাব পোড়ানোর মতো কর্মসূচি পালন করেছেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও আরও তিন নেতা মনোনয়ন ফরম তুলেছেন।
সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ মহাম্মদ বলেন, ‘মাসুদ অরুণ নেতা হিসেবে সবসময় অনুগত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কাজ করেন। তবে দলের কমিটি উপেক্ষা করে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাই আমরা প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি।’
মেহেরপুর-১ আসনের মনোনীত মাসুদ অরুণ বলেন, ‘দল আমাকে জনমতের ভিত্তিতে মনোনয়ন দিয়েছে। বিএনপিতে মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা স্বাভাবিক। যারা ধানের শীষের বিরোধিতা করছেন, তারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করছেন। এটি দলের প্রতি আস্থাহীনতার প্রতিফলন।’
মেহেরপুর-২ আসনের মনোনীত আমজাদ হোসেন বলেন, ‘দল বড়, এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। আমি নেতাকর্মীদের ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার জন্য অনুরোধ করছি। ২০০৮ সালে খুলনা বিভাগে বিএনপির যে দুই আসনে জয়ী হয়েছিল, তার একটিতে আমি নির্বাচিত হয়েছিলাম।’
জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন জানান, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর দলের জন্য লড়াই করেছি। দলের বিভাজন মেটাতে এবং সুসংগঠিত করতে কমিটি গঠন করেছি। মনোনয়ন পরিবর্তনের মাধ্যমে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে বলে আশা রাখছি।’
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫