বিশ্বব্যাপী ইউক্রেনে বাঁধ ধ্বংসে খাদ্যনিরাপত্তায় ব্যাপক প্রভাবের আশঙ্কা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৪ জুন ২০২৩ ০১:৩৭ অপরাহ্ণ   |   ২১৫ বার পঠিত
বিশ্বব্যাপী ইউক্রেনে বাঁধ ধ্বংসে খাদ্যনিরাপত্তায় ব্যাপক প্রভাবের আশঙ্কা

উক্রেনের নোভা কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস করায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। দিনিপ্রো নদীর পানি উপচে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এদিকে সোভিয়েত আমলের এই বাঁধ গুঁড়িয়ে দেওয়ায় বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই বাঁধ ধ্বংস হওয়ার কারণে খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কয়েক হাজারে মানুষ তীব্র খাওয়ার পানির সংকটে পড়তে পারে। ঐ বাঁধ গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ইউক্রেন এবং রাশিয়া একে অন্যকে দোষারোপ করছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, আসলেই ঐ হামলার পেছনে কারা দায়ী।


গত সপ্তাহে সোভিয়েত আমলের গুরত্বপূর্ণ এই বাঁধটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে দিনিপ্রো নদীর পানি বেড়ে আশপাশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। বন্যায় ইউক্রেনের বিপুল এলাকার কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে দেশটির কৃষিখাতে দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। 

দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে যে, দক্ষিণ ইউক্রেনের মাঠগুলো আগামী বছরের শুরুর দিকেই ‘মরুভূমিতে পরিণত হতে পারে’। কারণ কাখোভকা জলাধারের ওপর নির্ভরশীল সেচ ব্যবস্থাগুলো আর কাজ করছে না। ইউক্রেনীয় কৃষি মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, যুদ্ধের আগে ওই এলাকার ৩১টি সেচব্যবস্থার মাধ্যমে ৫ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ করা হতো। এই পানির একমাত্র উত্স ছিল কাখোভকা জলাধার। তবে স্যাটেলাইটের বেশ কিছু ছবি থেকে বাঁধে বিস্ফোরণের মতো কিছু একটা হতে দেখা গেছে। কিন্তু সেখানে আসলে কী ঘটেছে তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। জাতিসংঘের সহায়তা বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, এই বাঁধ ধসে পড়ার কারণে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেন, এটা শুধু ইউক্রেনের জন্য নয় বরং, পুরো বিশ্বের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। 

আমরা ইতিমধ্যেই খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে  সংকটে আছি। আমি নিশ্চিত খাদ্যের দাম এখন আরো বাড়বে।


তিনি বলেন, এটা প্রায় অনিবার্য যে আমরা পরবর্তী ফসল বপন, উত্পাদন এবং ফসল কাটার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা দেখতে যাচ্ছি। তাই আমরা যা দেখতে পাচ্ছি তাতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ওপর একটি বড় প্রভাব পড়তে যাচ্ছে এবং এটাই ঘটতে চলেছে। বিশ্বের দুটি প্রধান খাদ্য উত্পাদনকারী দেশ হচ্ছে ইউক্রেন এবং রাশিয়া। গম, বার্লি, ভুট্টা, সরিষা, সরিষার তেল, সূর্যমুখীর বীজ এবং সূর্যমুখী তেলের বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশ।

গ্রিফিথ বলেন, প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানির জন্য এই বাঁধের পেছনের জলাধারের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বিশুদ্ধ পানি ছাড়া মানুষ রোগে আক্রান্ত হবে এবং শিশুরা এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, বেসামরিক অবকাঠামোতে এ ধরনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি জেনেভা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। যে বা যারা এটা করেছে, তারা জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে।