৪৩তম বিসিএসের ফল যাচাই-বাছাইয়ের কারণে পেছাতে পারে

অধিকতর যাচাই–বাছাইয়ের কারণে ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল পেছাতে পারে বলে জানিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ঈদের আগেই এ মাসে এই বিসিএসের ফল প্রকাশের কথা থাকলেও তা এই কারণে পেছাতে পরে বলে জানিয়েছে পিএসসির একটি সূত্র।
পিএসসির সূত্রটি আরও জানায়, লিখিত পরীক্ষার সব খাতা দেখা শেষ। যেকোনো সময় এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার কথা থাকলেও ঈদের আগে তা দেওয়ার সম্ভাবনা কম।
জানতে চাইলে পিএসসির সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, ফলাফলে যেন কোনো ত্রুটি না থাকে এবং কোনো পরীক্ষার্থী যেন ত্রুটির কারণে বাদ না পড়েন, সে জন্য ফল অধিকতর যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে।
কেন শেষ সময়ে এসে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো জানতে চাইলে সূত্রটি জানায়, ৪৩তম বিসিএসের ফল প্রকাশে আসলে খুব লাভবান হবেন না প্রার্থীরা। কেননা, ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলমান। এটি শেষ না হলে ৪৩তম বিসিএসের ভাইভা নেওয়া সম্ভব নয়। তাই হাতে যেহেতু সময় আছে সে জন্য পিএসসি ফলাফল অধিকতর যাচাই-বাছাই করতে চায়।
পিএসসি সূত্র জানায়, গত মাসেই ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখা শেষ করেছে পিএসসি। প্রকাশের জন্য ফলাফলও তৈরি করা আছে। তবে অধিকতর যাচাই–বাছাই করার কারণে ফল ঈদের আগে প্রকাশের সম্ভাবনা কম। এ ছাড়া ফল প্রকাশের সঙ্গে ভাইভার তারিখও প্রকাশিত হতে পারে। তবে ভাইভার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে ৪১তম বিসিএস। ওই বিসিএসের ভাইভা চলমান। সেটি শেষ হলে ৪৩তম বিসিএসের ভাইভা শুরু করতে পারবে পিএসসি। কেননা, ভাইভা কার্যক্রম চলা অবস্থায় শুধু নির্দিষ্ট বোর্ড ভাইভা নিতে পারে।
ওই সূত্র আরও জানায়, সাম্প্রতিক কয়েকটি বিসিএসের মধ্যে ৪৩তম বিসিএসের খাতা দেখার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা হয়েছে। এই কার্যক্রম পরিচালনার পেছনে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিল পিএসসি। ৪১তম বিসিএসে ৩১৮ জন পরীক্ষক ভুল করেছিলেন। তাতে ফল পিছিয়ে গিয়েছিল। সেখানে প্রায় ১৫ হাজার খাতায় গরমিল দেখা দেয়। ফল ঝুলে যাওয়ার পর ৪৩তম বিসিএসের আগে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের সময় যাতে আগের পরীক্ষকদের করে যাওয়া ভুল আবার না হয়, সে জন্য পিএসসি এ বিশেষ উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে পিএসসির মিলনায়তনে সেমিনারে পরীক্ষকদের খাতা মূল্যায়নের জন্য একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখানোর ব্যবস্থা করা হয় পরীক্ষকদের। সেখানে চাকরিপ্রার্থীদের নাম-পরিচয় গোপন রেখে পরীক্ষা হয়ে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের খাতা দেখানো হয়। এ ছাড়া পরীক্ষকেরা যেসব ভুল সবচেয়ে বেশি করেন, সেগুলো চিহ্নিত করে দেখানো হয়। যেসব ভুল করা যাবে না, সেগুলোও দেখানো হয়। যেসব খাতায় পরীক্ষক অনেক ভুল করেছেন, সেসব খাতায় ভুলগুলো চিহ্নিত করা হয়। এগুলো কেন ও কীভাবে ভুল, তা প্রেজেন্টেশনে দেখানো হয়। সেমিনারে প্রতিদিন ১০০ পরীক্ষক অংশ নেন। একই ভুল যদি কোনো পরীক্ষক আবার করেন, তাহলে তাঁদের পরীক্ষক হিসেবে আর পিএসসিতে রাখা হবে না বলেও সেমিনারে বলে দেওয়া হয়।
গত বছরের জুলাইয়ে লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে পিএসসি। ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের ২০ জানুয়ারি ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৫ হাজার ২২৯ প্রার্থী।
৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ জন কর্মকর্তা নেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫, শিক্ষা ক্যাডারে ৮৪৩, অডিটে ৩৫, তথ্যে ২২, ট্যাক্সে ১৯, কাস্টমসে ১৪ ও সমবায়ে ১৯ জন নিয়োগ দেওয়া হবে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫