সময়টা এখন খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেটা পরিবর্তন হচ্ছে সেটা হলো টেকনোলজি। কত প্রযুক্তি এখন সবার ঘরে ঘরে। তবে এসব টেকনোলজি এখন মানুষকে একা করে ফেলছে। ব্যস্ততার কারণে আমরা আর আমাদের কাছের মানুষকে সময় দিতে পারি না। একাকিত্ব দূর করার জন্য আপন মানুষগুলো তখন টেকনোলজির আশ্রয় নিচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা এই সমস্যার সম্মুখীন বেশি হচ্ছে।
বাবা-মা উভয়েই চাকরিজীবী হলে তারা সবসময় সন্তানের পাশে থেকে খোঁজখবর নিতে পারেন না। তাই হয়তো সন্তানের হাতে অনেক অল্প বয়সেই মোবাইল, ট্যাব এসব তুলে দিচ্ছেন সন্তানের খোঁজ নেওয়ার জন্য। একদিক থেকে এটা উপকারীও বটে, সবসময় সন্তানের খোঁজ নিতে পারছেন ফোনে। কিন্তু অন্য সময় আপনার সন্তান কী করছে বা কার কার সঙ্গে কথা বলছে এসব ব্যাপারে অনেক বাবা-মা নজর দেন না। তবে নজর দেওয়া উচিত। এখন প্রায় সব কম বয়েসি বাচ্চারা ভিডিও গেইমে আসক্ত। যেটা শিশুর স্বাস্থ্য এবং মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য ক্ষতিকর। অনেক বাচ্চাকে দেখা যায় ভিডিও গেম ছাড়া সে এক মুহূর্ত কাটাতে পারে না বা খুব বাজে কোনো গেমে আসক্ত হয়ে পড়ে। বাবা-মায়ের এসব ব্যাপারেও নজর দেওয়া উচিত, শিশু কী ধরনের গেম খেলছে এটা সব বাবা-মায়ের জানা দরকার।
সোশ্যাল মিডিয়া, যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এসব আজকাল আমরা সবাই ব্যবহার করি। তবে সন্তানের সামনে ব্যবহার করার সময় একটু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ আপনি কীভাবে স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন, তা আপনার সন্তানকেও প্রভাবিত করবে। আর আপনার সন্তানের আইডি থেকে থাকলে তার সঙ্গে অ্যাড থাকুন। যাতে আপনি তার সঙ্গে তার বন্ধুর মতো মিশতে পারেন। খুব কঠিন হবেন না স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারে, আবার একেবারে বেখেয়ালিও হবেন না। ফেসবুকে কী রকম বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সে অ্যাড হচ্ছে তা জানার চেষ্টা করুন। ভুলেও কখনো সন্তানের অগোচরে তার আইডি চেক করবেন না বা তার একান্ত ব্যক্তিগত কোনো জিনিসে হাত দেবেন না। কিছু জানার থাকলে ভালোবাসা দিয়ে, তার সঙ্গে বসে কথা বলে জানার চেষ্টা করুন। আপনার প্রতি আপনার সন্তানের বিশ্বাস আর সন্তানের প্রতি আপনার বিশ্বাস দুটোই বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
ইন্টারনেট জগত্ নিয়ে বেশি সচেতন হতে হবে বাবা-মাকে। এটা এমন এক প্রযুক্তি যা মানুষের জানার পরিধিকে করেছে অসীম। শুধু লিখে সার্চ দিলেই চলে আসছে সবকিছু। টেকনোলজি কোনো বয়স মানে না। তাই যে বয়সে যেটা জানা বা বোঝা উচিত নয়, তাও জেনে যাচ্ছে শিশুরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এইসব ছোটখাটো জানাগুলোই কখনো বড় অপরাধ বা মানসিক সমস্যায় পরিণত হয়ে যাচ্ছে। তাই বাবা-মাকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। এখন সেফ ইন্টারনেট ব্যবহারেরও ব্যবস্থা আছে শিশুদের জন্য। এমন কিছু ব্যবস্থা নিয়ে বা ভালো কিছু সন্তানের জন্য রেখে বাকি সব সিকিউরিটি দিয়ে লক করে রাখতে পারেন যাতে আপনি চিন্তা মুক্ত থাকতে পারেন যে আপনার সন্তান ভালো কিছু দেখছে, ভালো কিছু জানছে।