মেঘনায় চরখেকো সিন্ডিকেটের থাবা রাতভর চলে অবৈধ বালু উত্তোলন 

প্রকাশকালঃ ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৪:৩৭ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
মেঘনায় চরখেকো সিন্ডিকেটের থাবা রাতভর চলে অবৈধ বালু উত্তোলন 

ঢাকা প্রেস,নিজস্ব প্রতিবেদকঃ


কুমিল্লার নদীবেষ্টিত এলাকা মেঘনা উপজেলায় রাতের আধারে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। রাতভর চলে এই অবৈধ বালু উত্তোলনের কার্যক্রম।

 

 এই বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। 
 

মেঘনা নদী সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে শতশত বিঘা কৃষি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বেপরোয়া বালু উত্তোলনের কারণে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন শতশত পরিবার। নদীর তীরবর্তী গ্রাম হওয়ায় রামপ্রসাদের চর, নলচর এবং মৈশারচর গ্রামের অধিকাংশ জমি ইতিপূর্বে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 
 

রামপ্রসাদের চর গ্রামের কয়েকজন সচেতন মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় বর্তমানে বালু উত্তোলন করছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। তাদের সরকারি কোন ইজারা না থাকলেও রাতের আধারে চুরি করে বালু উত্তোলন করছে বলে জানান এই গ্রামের বাসিন্দারা। 
 

এই বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন বর্তমানে আওয়ামিলীগ এবং বিএনপি নেতাদের যোগসাজশে রাতের আধারে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এই কাজে সরাসরি জড়িত রয়েছে চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রবিউল্লাহ রবি, মেঘনা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক হাসনাত প্রধান, আওয়ামিলীগের ওয়ার্ড সভাপতি টিটু সরকার, নলচর গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে জুয়েল মিয়া, মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে আঃবারেক, বারেক প্রধানের ছেলে আলী হোসেন এবং আব্দুর রশীদের ছেলে জাকির হোসেন সহ নলচর গ্রামের নাম না জানা আরো অনেকে জড়িত রয়েছে।
 

এসময় এলাকাবাসী জানান তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। যদি কেউ প্রতিবাদ করে তাহলে তার হাত-পায়ের রগ কেটে নেওয়াসহ হত্যার হুমকি প্রদান করা হয়। 
 

মেঘনায় চরখেকো সিন্ডিকেটের এমন ভয়াল থাবায় বসতভিটা আর কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে ইতোমধ্যে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার। 
 

স্বাধীন সংবাদের হাতে আসা তথ্য বলছে,  ২০২০ সালে হাইকোর্টে একটি রিটের মাধ্যমে মেঘনা নদীর সাপমারা চরে স্থায়ীভাবে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে এখানে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও ৫ই আগষ্ট আওয়ামিলীগ সরকারের পতনের পর নতুন একটি চরখেকো সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে ১০-১৫ টি ড্রেজার বসিয়ে কৃষি জমি কেটে নিচ্ছে। 
 

রাতের আঁধারে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে চালিভাঙ্গা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বলেন আমাদের নৌ পুলিশের পর্যাপ্ত সক্ষমতা না থাকায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা সন্ত্রাসী, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। 
 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন  করা সম্পূর্ণ অবৈধ। ইজারা বিহীন বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।