লাইফস্টাইল ডেস্ক, ঢাকা প্রেস নিউজঃ-
১) ভাজাভুজি: ভাজাভুজি খাবারে প্রচুর পরিমাণে তেল থাকে। তেল শরীরে চর্বি বাড়ায় এবং ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়। তাই রাতের খাবার থেকে ভাজাভুজি, যেমন: পোড়া মাছ, ভাজা পুরি, আলুর চিপস, সমুচা, সিঙ্গারা ইত্যাদি বাদ দেওয়া উচিত।
২) মসলাযুক্ত খাবার: মসলাযুক্ত খাবার হজমে বেশি সময় নেয় এবং ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই রাতের খাবারে মসলাযুক্ত খাবার, যেমন: ঝাল ঝোল, রসুন-পেঁয়াজ বাটা দেওয়া খাবার, মশলাদার তরকারি ইত্যাদি বাদ দেওয়া ভালো।
৩) চিনিযুক্ত পানীয়: চিনিযুক্ত পানীয়, যেমন: কোক, পেপসি, জুস, শরবত ইত্যাদি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়। তাই রাতের খাবারের সাথে অথবা খাবারের পর চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।
৪) লবণাক্ত খাবার: লবণাক্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে। সোডিয়াম শরীরে পানি ধরে রাখে এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করে। তাই রাতের খাবারে লবণাক্ত খাবার, যেমন: শুঁটকি, বেচনা, আচার, পনির ইত্যাদি বাদ দেওয়া উচিত।
৫) লাল মাংস: লাল মাংসে প্রচুর পরিমাণে চর্বি ও পুরিন থাকে। চর্বি শরীরে চর্বি বাড়ায় এবং পুরিন রক্তে uric acid-এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান এবং গাউটের সমস্যা থাকে তাদের রাতের খাবারে লাল মাংস, যেমন: গরুর মাংস, খাসির মাংস, শুয়োরের মাংস ইত্যাদি বাদ দেওয়া উচিত।
৬) পরিশোধিত শর্করা: পরিশোধিত শর্করা সমৃদ্ধ খাবার, যেমন: সাদা ভাত, সাদা পাউরুটি, চিনি, মিষ্টি ইত্যাদি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়। তাই রাতের খাবারে পরিশোধিত শর্করা সমৃদ্ধ খাবার বাদ দেওয়া উচিত।
৭) ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়: ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়, যেমন: চা, কফি, কোকো ইত্যাদি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই রাতের খাবারের পর ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।
৮) ফাস্টফুড: ফাস্টফুডে প্রচুর পরিমাণে অস্বাস্থ্যকর চর্বি, সোডিয়াম ও চিনি থাকে। এসব খাবার শরীরে চর্বি বাড়ায় এবং ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়। তাই রাতের খাবারে ফাস্টফুড, যেমন: বার্গার, পিজা, ফ্রেঞ্চফ্রাই ইত্যাদি
কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার:
রাতের খাবারে ভাতের পরিবর্তে রুটি, গমের রুটি, অথবা চপাতি খাওয়া ভালো। ভাতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে এবং ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
সাদা পাউরুটিতেও প্রচুর পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট থাকে। এর পরিবর্তে গমের পাউরুটি বা বাদামী রুটি খাওয়া যেতে পারে।
রাতের খাবারে মিষ্টি, মিষ্টি পানীয়, চকোলেট, আইসক্রিম এড়িয়ে চলা উচিত। এগুলোতে ক্যালোরি ও চিনি বেশি থাকে যা ওজন বাড়াতে পারে।
চর্বিযুক্ত খাবার:
ভাজা খাবারে অস্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে যা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং ওজন বাড়াতে পারে। রেড মিটে संतृপ্ত চর্বি বেশি থাকে। সপ্তাহে দুইবারের বেশি রেড মিট খাওয়া উচিত নয়। ফুল ফ্যাট দুধ, পনির, মাখন এড়িয়ে চলা উচিত। এর পরিবর্তে কম চর্বিযুক্ত বা চর্বিমুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া যেতে পারে।
অন্যান্য:
প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে অস্বাস্থ্যকর উপাদান থাকে যা ওজন বাড়াতে পারে। অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়তে ক্যালোরি বেশি থাকে। তাই নিয়মিত অ্যালকোহল পান করা উচিত নয়।
কিছু টিপস:
রাতের খাবারে ভারী খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। হালকা স্যুপ, সালাদ, শাকসবজি, মাছ, মুরগির মাংস ইত্যাদি খেতে পারেন। ঘুমানোর ঠিক আগে খাওয়া ওজন বাড়াতে পারে। তাই রাতের খাবারের অন্তত দুই ঘন্টা আগে খেয়ে নিন। পানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই দিনভর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। নিয়মিত ব্যায়াম ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
মনে রাখবেন:
এই তালিকাটি কেবলমাত্র একটি নির্দেশিকা। আপনার ডায়েট সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে পরামর্শ নিন।