কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরসার গান কমান্ডার গ্রেফতার!

ঢাকা প্রেস
মঈনুদ্দীন শাহীন উখিয়া ;
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ মিয়ানমার ভিত্তিক সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার গান কমান্ডার জাকারিয়াকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃত মো. জাকারিয়া উখিয়ার বালুখালীর ১০ নম্বর ক্যাম্পের মৃত আলী জোহরের ছেলে।
র্যাব ১৫ জানায়, জাকারিয়ার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত
জিথ্রি রাইফেল নামক বিদেশী এই ভারী আগ্নেয়াস্ত্রটি মিয়ানমারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহার করে এবং ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর উদ্দ্যেশ্যে মিয়ানমার থেকে অস্ত্রটি সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশে এনেছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) বেলা ১১ টার দিকে র্যাব ১৫ এর কক্সবাজারস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যটি নিশ্চিত করেন অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন।
অধিনায়ক লে. কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন আরো জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব গোয়েন্দা সূত্রে তথ্য ছিল ১০ নম্বর ক্যাম্পে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা'র কতিপয় সদস্য নাশকতার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার হতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র নিয়ে এসেছে। সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোরে ১০ নম্বর ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকারিয়া স্বীকার করে সে সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিলিং মিশনে কাজ করে আসছিলো। মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র পালংখালী ইউনিয়নের ঘাটি বিলে লুকিয়ে রাখা হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে উল্যেখিত স্থানে অভিযান চালিয়ে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহৃত ১টি জি থ্রি রাইফেল ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
জাকারিয়া ২০১৭ সালে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে এসে ১০ নম্বর ক্যাম্পে স্বপরিবারে বসবাস শুরু করে। মিয়ানমারে অবস্থানকালে আরসার শীর্ষ কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং আরসায় যোগদান করে। বাংলাদেশে প্রবেশের প্রথম দিকে সে আরসার নেট দল (সংবাদদাতা) এবং পরবর্তীতে গান গ্রুপের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করে। এরপর ২০২৩ সালের শেষের দিকে সে ১০ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক-এফ/১৭ এর ব্লক কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পায়। এ সময় তার নেতৃত্বে আরসার অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপহরণ, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্ম পরিচালিত হতো। ২০২২ সালে গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের সময় আরসা সন্ত্রাসীদের হামলায় গোয়েন্দা সংস্থার একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর ক্যাম্প এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করলে সে মিয়ানমারের পালিয়ে যায়। কিছু দিন পর আবারও বাংলাদেশে এসে আরসার গান গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন কিলিং মিশন ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড শুরু করে। সে অস্ত্র চালনায় দক্ষ হওয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংগঠিত বিভিন্ন নাশকতা, মারামারি, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরী, অপহরণ, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করতো বলে জানা যায়।
এর আগেও উখিয়া থানার একাধিক মামলায় কারাভোগ করা জাকারিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে উখিয়া থানার সোপর্দ করা হয়েছে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫