রাজস্ব না বাড়ালে দুরবস্থা কাটবে না: এনবিআর চেয়ারম্যান
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেছেন, “দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে যত আলোচনা ও বিশ্লেষণই করি না কেন, সারকথা একটাই—রাজস্ব আয় না বাড়ালে এই দুরবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। আমাদের ব্যয়ের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, সে হারে রাজস্ব যোগান আসছে না।”
তিনি আরও বলেন, “অনেকে বলেন, জিডিপি ক্যালকুলেশনে ভুল থাকতে পারে। আবার আমরা অনেক ক্ষেত্রে কর ছাড় দেই—এগুলোও রাজস্ব কমার অন্যতম কারণ। তবে বড় কারণ হচ্ছে—কর প্রদানে অনীহা ও দুর্বল কমপ্লায়েন্স। এই জায়গায় আমাদের ‘রেভিনিউ সৈনিকদের’ আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর স্কাই সিটি হোটেলের ব্যাংকুয়েট হলে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাকসেশন) অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘অন্তরঙ্গন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “বিশ্বের যে কোনো দেশে রেভিনিউ কর্মকর্তাদের অবমূল্যায়ন করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। আয়কর পরিবার একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবার। নানা কারণে আমাদের মধ্যে কিছু দূরত্ব তৈরি হয়েছে—তা হয়তো তথ্যের ঘাটতি, ব্যয়ের অসামঞ্জস্য বা রাজস্ব আদায়ে জটিলতা থেকে। কিন্তু এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আমাদের সেই দূরত্ব কমাতে সাহায্য করবে।”
তিনি জানান, সম্প্রতি সব কর অঞ্চলে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। “আমরা দেখেছি, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল ও আয়কর গোয়েন্দা বিভাগ প্রয়োজনীয় পরিমাণে কাজ করতে পারছে না। তাই প্রতিটি জোনকে নিজস্বভাবে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছি,” বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
কমপ্লায়েন্স ঘাটতির উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “গতকাল আইবাস সিস্টেম থেকে তথ্য নিয়ে দেখি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বড় একটি অংশ, যাদের আয় করযোগ্য, তারা নিয়মিত বেতন থেকে ট্যাক্স কর্তন করছেন না। অথচ ২০১৪ সালের ফাইন্যান্স অ্যাক্টে এটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “এই বিষয়ে আমি ইতিমধ্যে সব সচিবকে ডিও লেটার পাঠিয়েছি। তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যেন নিজ নিজ দপ্তরের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স অফিসারদের মাধ্যমে ট্যাক্স কর্তন নিশ্চিত করা হয়। এমনকি এনবিআর ও আইআরডিতেও অনেক কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা বেতন থেকে ট্যাক্স কাটেন না—এ বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জিএম আবুল কালাম কায়কোবাদ। সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এনবিআর সদস্য (করনীতি) ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী। সূচনা বক্তব্য দেন সংগঠনের মহাসচিব ও কর পরিদর্শন পরিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মহিদুল হাসান।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫