দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস মানেই নেগেটিভ নয়

প্রকাশকালঃ ১৩ জুলাই ২০২৩ ০১:০৭ অপরাহ্ণ ১৬৫ বার পঠিত
দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস মানেই নেগেটিভ নয়

দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেসে আক্রান্ত হতেই হয়। তবে স্ট্রেসের রকমভেদ আছে। আমরা ধরে নেই স্ট্রেস একটি খারাপ জিনিস। আর স্ট্রেস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনলাইন থেকে নানা তথ্য সংগ্রহ করি। কিন্তু যেহেতু স্ট্রেসের রকমভেদ আছে তাই সমাধানের পথও আলাদা হবে।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা লক্ষ্য করে দেখেছেন সব স্ট্রেস মন্দ নয়। কিছু স্ট্রেস আমাদের সম্ভাবনাকেও জাগিয়ে তুলতে পারে। আজ মূলত এই স্ট্রেস নিয়েই আলোচনা করব। 

প্রথমেই বলি নেগেটিভ স্ট্রেসের কথা
নেগেটিভ স্ট্রেস আপনার শরীরের ওপর ব্যাপক চাপ ফেলে। হজমে সমস্যা, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, হজমে গোলযোগ, কোনোকিছুতে মন না বসা, কাজে অনীহাসহ আরও অনেক সমস্যা এই নেগেটিভ স্ট্রেসে হয়ে থাকে। এই স্ট্রেসটিকেই কর্মজীবনে মানুষের অবসন্নতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই নেগেটিভ স্ট্রেস আপনাকে সবসময় খারাপ রাখে। কিছুই ভালো লাগে না। ফ্রয়েডও এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কাজ করেছেন। তবে নেগেটিভ স্ট্রেসের ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যক্তি নিজেই কিছু বিষয়ে অস্বীকার করার মনোভাব রাখেন জেদ ধরে। তারা কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আগপিছু ভাবেন ও আটকে থাকেন। অপ্রীতিকর হলেও এসব বিষয়ে স্পষ্ট হয়ে যাওয়া ভালো। 


এবার আসুন পজিটিভ স্ট্রেসের বিষয়ে
ধরুন আজ বিকালের মধ্যে আপনাকে একটা কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু এতটুকু সময় যথেষ্ট নয়। তখন আপনি এক ধরনের স্ট্রেসে ভোগেন। এই স্ট্রেসে আপনার কর্মোদ্দীপনা বেড়ে যায় ও আপনি দ্রুত কাজ করেন। মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন বা কারও সাহায্য প্রার্থনা করেন। যারা একটু আলসে স্বভাবের তাদের জন্য তা নেগেটিভ স্ট্রেসে পরিণত হতেই পারে। কিন্তু পেশাগত জীবনে পজিটিভ স্ট্রেসও লাগে। এই স্ট্রেস তখনই আপনায় নিস্তার দেবে যখন কাজ শেষ হবে। আর তখন আপনার মনে এক ধরনের সুখানুভূতি কাজ করবে। তাই পজিটিভ স্ট্রেসও আপনার জন্য জরুরি। 

স্ট্রেসের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হলো পজিটিভ বা নেগেটিভ যেটাই হোক, পরিস্থিতি যেকোনো সময় পালটে যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার ভাবনার জায়গায় স্ববিরোধিতা দূর করা জরুরি। স্ববিরোধিতাই আপনার অশান্তির মূল কারণ। কেন মেনে না নেওয়ার এই চিন্তায় থাকছেন। সিদ্ধান্ত নিন ও অপ্রীতিকর হলেও ছুড়ে ফেলে দিন কিছু বিষয়। একটি নিয়মবদ্ধ গণ্ডিতেই মানুষ তার স্ট্রেসকে দূর করতে পারে। 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পর্কের মতো ক্ষুদ্র গণ্ডি থেকে পজিটিভ ও নেগেটিভ স্ট্রেসের প্রভাব বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে পড়ে। যিনি স্ট্রেসে আক্রান্ত হন তিনি অনেক সময় মনে করেন এই জায়গাটি ক্ষুদ্র ও এটি মূল সমস্যা নয়। ফলে প্রাত্যহিক জীবনে এর প্রভাব পড়ে। দুটো আলাদা ভাগে ভাগ করার ফলে দুটো ভিন্ন ফলাফল পাওয়া গেছে। যারা মূলত ভাবনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় রাখেনি তারা দ্রুত মানসিক শান্তি ও কর্ম-স্পৃহা ফিরে পেয়েছে। আর যারা নিজেদের ভাবনাকে ঝুলন্ত রেখেছে তাদেরই পড়তে হয়েছে হতাশার বৃত্তে।