ঢাকা প্রেস নিউজ
নজরুলসংগীতের অন্যতম নন্দিত শিল্পী ফেরদৌস আরা। দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে গান গাওয়ার সুযোগ পাননি। তবে গত ৫ আগস্ট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর, আবারও তিনি বিটিভি ও বেতারের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন।
এ বছর রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক-এর জন্য ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করেছে সরকার। সেই তালিকায় স্থান পেয়েছেন ফেরদৌস আরাও।
এই স্বীকৃতি প্রসঙ্গে ফেরদৌস আরা বলেন,
"একুশে পদক পাওয়া সত্যিই আনন্দের। এটি শুধু সম্মান নয়, দায়িত্বও বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সংগীত ক্যারিয়ারে বহু মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি। তাই আমার শ্রোতা, ভক্ত, অনুরাগী এবং পরিবারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।"
তিনি আরও বলেন,
"স্বীকৃতি কাগজ-কলমের বিষয়, কিন্তু মানুষের ভালোবাসাই শিল্পীর সবচেয়ে বড় অর্জন। আমি সারা জীবন সেই ভালোবাসা পেয়েছি। পদক আনন্দ বাড়িয়ে দেয়, শিল্পীসত্তার পূর্ণতা দেয়। সবার কাছে দোয়া চাই, যেন সুস্থ থেকে আরও গান করে যেতে পারি।"
বিগত সরকারের সময়ে অনেক শিল্পীই বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের অঘোষিত কালো তালিকায় ছিলেন। কারা পরিবেশন করতে পারবেন, আর কারা পারবেন না—এ নিয়ে ছিল এক অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা। সেই তালিকায় ফেরদৌস আরার নামও ছিল।
এ বিষয়ে তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন,
"দীর্ঘ ১৫ বছর বিটিভি ও বেতার থেকে এক প্রকার বিচ্ছিন্ন ছিলাম। অথচ এ দুটি প্রতিষ্ঠান শিল্পী তৈরিতে অনন্য ভূমিকা রাখে। হঠাৎ করে আমাকে কেন বঞ্চিত করা হলো, সেটাই বুঝতে পারিনি। শুনেছি, অনেকে রাজনৈতিক কারণে নিষিদ্ধ ছিলেন। কিন্তু আমি তো রাজনীতি করি না। তাহলে আমাকে কেন গান গাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি? এই প্রশ্নের উত্তর আজও পাইনি।"
ফেরদৌস আরা বর্তমানে আবারও বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারছেন, যা তাকে নতুন উদ্যমে সংগীতচর্চায় অনুপ্রাণিত করছে।