|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১২ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:৫২ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৫ মে ২০২৪ ০৩:১৯ অপরাহ্ণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদুল আজহার বাজার: ১৫শ কোটি টাকার পশু কেনাবেচার আশা


ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদুল আজহার বাজার: ১৫শ কোটি টাকার পশু কেনাবেচার আশা


প্রতি বছর ঈদুল আজহা ঘিরে কোরবানির পশু বেচাকেনার মাধ্যমে বড় অংকের লেনদেন হয়। যার মাধ্যমে গতি আসে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে। এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১৫’শ কোটি টাকার পশু কেনাবেচার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আপাতত খামার গুলোতে চাহিদার সমপরিমাণ কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত থাকলেও শেষ মুহূর্তে চাহিদা আরও বেড়ে সংকট তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি এবার পশু পালনে খরচ বাড়ায় হাটে পশুর দাম কিছুটা বাড়বে বলে মনে করছেন খামারিরা।


তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এবারও চোরাই পথে ভারতীয় গরু আসার শঙ্কায় রয়েছেন তারা। এটি ঠেকানো না গেলে, বড় অংকের লোকসান গুণে পথে বসতে হবে বলে জানিয়েছেন এসব স্থানীয় খামারি। যদিও প্রাণি সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে গরু আসা বন্ধে কঠোর নজরদারি থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪ হাজারেরও বেশি খামারি কোরবানির পশু মোটাতাজা করেছেন।

 

মূলত যার গোয়ালে অন্তত ৫টি গরু-মহিষ আছে, তাকেই খামারি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঈদকে সামনে রেখে হাটে ভালো দাম পাওয়ার আশায় এখন পশুর বাড়তি যতœ নেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত খাবার। সবকটি খামারেই কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। জেলার বাণিজ্যিক খামার ও সাধারণ কৃষকদের কাছে ১ লাখ ২৭ হাজার কোরবানি যোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে ৯৩ হাজার ১৭৪টি গরু, ১২ হাজার ২৩৪টি মহিষ, প্রায় ১৫ হাজার ছাগল এবং সাড়ে ৬ হাজার ভেড়া রয়েছে। যা আপাতত কোরবানির চাহিদার সমপরিমাণ।

 

খামারগুলোতে দেশীয় ষাড়, শাহী ওয়াল ও ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। এর মধ্যে দেশী ষাঁড়ের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। মূলত পশুখাদ্যের দাম বাড়ায় পশুপালনে খরচ বেড়েছে খামারিদের। বিগত বছরের তুলনায় ভূষি ও ভুট্টাসহ অন্যান্য পশুখাদ্য বস্তাপ্রতি বেড়েছে কয়েকশ টাকা। এছাড়া পশুর পরিচর্যায় নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরিও বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের রূপচাঁন বিবি ডেইরি ফার্মের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম মিয়া জানান, এবার তাদের খামার থেকে কোরবানিযোগ্য ১২০টি গরু ও মহিষ হাটে তোলা হবে।

 

সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে ৫ লাখ টাকা দামের গরু ও মহিষ রয়েছে খামারে। খাবার এবং চিকিৎসা খতে খরচ বাড়ায় গরু-মহিষ পালনে খরচ বেড়েছে। তাই বাড়তি দামেই হাটে পশু বিক্রি করতে হবে। জেলা শহরের খাঁজা ডেইরি ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী মো. জুয়েল মিয়া জানান, পশুখাদ্যের সঙ্গে শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে। তাই পশুর দাম না বাড়ালে বড় অংকের লোকসান গুণতে হবে। কোরবানির জন্য সবসময় দেশীয় ষাঁড়ের চাহিদা থাকে বেশি। এছাড়া প্রত্যেক খামারেই পর্যাপ্ত গরু-মহিষ রয়েছে। তাই বিদেশ থেকে গরু আমদানির প্রয়োজন হবে না।


জেলা ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সাইফুদ্দিন খান শুভ্র বলেন, পশু পালনে খরচের ওপর নির্ভর করে পশুর দাম। গেল কয়েক বছর ধরেই বেড়েছে পশুখাদ্যের দাম। যা এখনও ঊর্ধ্বগামী। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এবার পশুর দাম বাড়বে। আর পশুর দাম ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে গেলে খাদ্যের দাম কমিয়ে পশুর উৎপাদন বাড়াতে হবে। যখন পশু পালনে খরচ কমে আসবে, তখন স্বাভাবিক ভাবেই তুলনামূলক কম দামে পশু পাওয়া যাবে।

 

তিনি আরও বলেন, আমাদের খামারিদের কাছে যে পরিমাণ পশু আছে, তাতে করে কোরবানির জন্য পশুর কোনো সংকট হবে না। সব মিলিয়ে ১৩শ থেকে ১৫শ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবে বলে আশা করছি। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা কামাল চৌধুরী জানান, পশু পালনে খরচ কমাতে সবময়ই প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটা তাজারকরণে খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হয়।

 

তবে এবার চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পশু পালনে খামারিদের খরচ বেড়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই পশুর দাম কিছুটা বাড়বে। তবে জেলায় এবার পশুর সংকট হবে না বলে আশা করছি। এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তিনটি থানা সীমান্তবর্তী। চোরাইপথে কোন গরু যাতে প্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়ে সর্তক রয়েছে পুলিশ।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫