ঢাকা প্রেস নিউজ
২০০৭ সালে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আদালতের রায়ে তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার পাশাপাশি সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মামলা চলাকালীন সময়ে মারা যাওয়া তিন কর্মকর্তার পরিবারের প্রতিও একই সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় প্রদান করেন।
এর আগে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে আদালত আজকের দিন রায়ের জন্য নির্ধারণ করেন।
আইনজীবীদের উপস্থিতি এই মামলায় আপিলকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন, আর প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মো. রুহুল কুদ্দুস। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক এবং নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
মামলার পটভূমি ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে চার দলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয় এবং এর ভিত্তিতে ৮৫ জন কর্মকর্তাকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল তাদের আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে তারা আপিল করলে ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল তাদের পক্ষে রায় প্রদান করে এবং চাকরিতে পুনর্বহালের আদেশ দেয়।
আপিল ও রায় স্থগিতাদেশ এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি ‘লিভ টু আপিল’ দায়ের করে। ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন এবং বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে।
২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া পুনর্বহালের রায় বাতিল করে, ফলে তাদের চাকরিতে ফেরার পথ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০২৩ সালে আপিল বিভাগের রায়ের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা। এই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত গতকাল রায়ের দিন ধার্য করে এবং আজ চূড়ান্ত রায় প্রদান করে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন।