ঢাকা প্রেস নিউজ
গত ১৫ বছরে পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়া ৭৬৪ জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে পুনরায় এই সুবিধা দেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। উপসচিব থেকে সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য গঠিত বঞ্চনা নিরসন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই সুবিধা দেওয়া হবে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এই তথ্য জানান।
জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, বঞ্চনা নিরসন কমিটির সুপারিশ এবং সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন। যদিও কিছুটা সময় লাগতে পারে, তবুও এটি ইতিবাচক। নিয়ম অনুযায়ী সবকিছুই করতে হবে, এবং এর বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, এটি সরাসরি পদোন্নতি না হলেও সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা প্রদান নিশ্চিত করা হবে। এই সুবিধা প্রদান করে সরকারি আদেশ জারি করা হবে, যার ভিত্তিতে আর্থিক আদেশেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা পাবেন। সরকার নীতিগতভাবে এই পদক্ষেপে সম্মত হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ সচিব আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, পদমর্যাদা ও পদে বসানো এক বিষয় নয়। পদমর্যাদা অনুযায়ী সরকারি আদেশ দেওয়া হবে, এবং হিসাবের দায়িত্ব এজি অফিসের ওপর থাকবে। এই সুবিধা পেনশনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
এর আগে, গত ১০ ডিসেম্বর, পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়। ১৬ সেপ্টেম্বর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সাবেক অর্থসচিব ও বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে যারা সরকারি চাকরিতে বঞ্চিত হয়েছেন এবং এই সময়ের মধ্যে যারা অবসরে গেছেন, তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে কমিটি সুপারিশ প্রণয়ন করেছে।
সূত্র মতে, নির্ধারিত সময়ে মৃত কর্মকর্তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ১৯টি আবেদনসহ মোট ১,৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল, যার মধ্যে ১৩টি কমিটির আওতার বাইরে ছিল। ফলে ১,৫২৭টি আবেদন যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটি ২৮টি সভা করে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই সুপারিশ তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে।
কমিটি সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড) এ ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে ৪ জন কর্মকর্তার জন্য পদোন্নতির সুপারিশ করেছে। যেহেতু তারা অবসরে গেছেন, তাই তাদের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ৭৬৪ জন কর্মকর্তার মধ্যে ৯ জনকে চার ধাপ, ৩৪ জনকে তিন ধাপ, ১২৬ জনকে দুই ধাপ এবং ৫৯৫ জনকে এক ধাপ পদোন্নতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বঞ্চিত এই কর্মকর্তাদের নতুন পদমর্যাদা অনুযায়ী আর্থিক সুবিধা প্রদানে আনুমানিক ব্যয় হবে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা।