|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১০:০৮ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৩১ অপরাহ্ণ

জামায়াতের প্রার্থিতা নিয়ে কৃষ্ণ নন্দীর মন্তব্য: ‘দল মোটামুটি নিশ্চিত করেছে, প্রস্তুতি নিচ্ছি’


জামায়াতের প্রার্থিতা নিয়ে কৃষ্ণ নন্দীর মন্তব্য: ‘দল মোটামুটি নিশ্চিত করেছে, প্রস্তুতি নিচ্ছি’


খুলনা-১ আসনে (বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলা) জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী। তিনি জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এলাকাজুড়ে তাঁর প্রার্থিতা নিয়ে ইতিমধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। কৃষ্ণ নন্দী প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দল থেকে ইতিবাচক সংকেত পেয়েছেন।
 

তিনি বলেন,
‘দল যদি আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করে, আমি অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেব। খুলনা-১ আসনে দল আমাকে মোটামুটি নিশ্চিত করেছে। এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পরই মাঠে নামব। আমি না গেলেও আমার কর্মীরা ইতোমধ্যে এলাকায় কাজ শুরু করেছে।’

 

ব্যবসায়ী কৃষ্ণ নন্দীর বাড়ি ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে। খুলনা-৫ আসনে (ডুমুরিয়া ও ফুলতলা) জামায়াতের প্রার্থী মিয়া গোলাম পরওয়ারের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গত এক বছর ধরে তাঁকে নিয়মিত দেখা গেছে। তাঁর নেতৃত্বে এসব কর্মসূচিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়। ২০০৩ সালে জামায়াতে যোগ দেওয়া কৃষ্ণ নন্দী বর্তমানে ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার সভাপতি।
 

তবে খুলনা-১ আসনে পূর্বঘোষিত প্রার্থী হিসেবে আছেন বটিয়াঘাটা উপজেলা জামায়াতের আমির শেখ আবু ইউসুফ।
 

জনপ্রার্থী হিসেবে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান জানান,
‘কেন্দ্র থেকে আগে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পরবর্তী পর্যায়ে প্রার্থী পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে। এ মাসের ১৫ থেকে ১৬ তারিখের দিকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে কিছু এলাকায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও উপজাতি সম্প্রদায় থেকে প্রার্থী দেওয়া হতে পারে। এখন যা শোনা যাচ্ছে, তা চূড়ান্ত নয়। খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

 

এদিকে খুলনা-১ আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, যিনি ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ছিলেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান (পাপুল), সাবেক ছাত্রনেতা পার্থ দেব মণ্ডল এবং বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষে দাকোপ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর কুমার রায় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে আছেন।
 

দলীয় ও স্থানীয় সূত্র বলছে, ‘আওয়ামী লীগের ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত খুলনা-১ আসনে ১৯৯১ সালের পর বিএনপি কেবল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচনে জয় পেয়েছিল। এখানে সবসময় সংখ্যালঘু প্রার্থীরাই বিজয়ী হয়েছেন। একসময় বাম দলের প্রভাব থাকলেও জামায়াতের অবস্থান দুর্বল ছিল, তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা কিছুটা বেড়েছে।
 

খুলনা-১ আসনের নির্বাচনী ইতিহাস (সংক্ষেপে):

  • ১৯৭৩ – এখনকার খুলনা-১ ছিল খুলনা-৫, এমপি: কুবের চন্দ্র বিশ্বাস

  • দ্বিতীয় সংসদ – প্রফুল্ল কুমার শীল

  • ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারি) – বিএনপি প্রার্থী প্রফুল্ল কুমার

  • ১৯৯৬ (পরবর্তী নির্বাচন) – জয়ী শেখ হাসিনা → আসন ছাড়লে উপনির্বাচনে পঞ্চানন বিশ্বাস জয়ী

  • ২০০১ – পঞ্চানন বিশ্বাস

  • ২০০৮ – আওয়ামী লীগের ননী গোপাল মণ্ডল

  • ২০১৪ ও ২০১৮ – পঞ্চানন বিশ্বাস

  • ২০২৪ – ননী গোপাল মণ্ডল
     

সব মিলিয়ে আসনটিতে এখন পর্যন্ত সব নির্বাচনে সংখ্যালঘু প্রার্থীরাই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

 


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫