কমেছে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন

প্রকাশকালঃ ১৬ জুলাই ২০২৪ ১২:১০ অপরাহ্ণ ৩১৩ বার পঠিত
কমেছে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন

দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন চলতি বছরের মে মাসে আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে ১.৪৭ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া মে মাসে দেশের বাইরেও কমেছে ৯.৯৪ শতাংশ। আর বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন কমেছে ১৪.৬৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলে দেশের ভেতর ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। আর মে মাসে হয়েছে দুই হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। সেই হিসেবে মে মাসে কমেছে ৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খরচ হয়েছে এক হাজার ৪০১ কোটি, খুচরা দোকানে ৩৭৬ কোটি, ইউটিলিটি বাবদ ২৪৫ কোটি, নগদ উত্তোলন ১৯৩ কোটি, ফার্মেসিতে ১৫১ কোটি, কাপড় কেনায় ৩১১ কোটি, ফান্ড স্থানান্তর ৯০ কোটি, পরিবহনে ৮৭ কোটি, বিজনেস সার্ভিস ৫৩ কোটি, প্রফেশনাল সার্ভিস ১৯ কোটি ও সরকারি সেবায় ১১ কোটি টাকা।


এ ছাড়া দেশের ভেতর মে মাসে ভিসা কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয়েছে এক হাজার ৯৭০ কোটি টাকা, মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ৪৮৬ কোটি টাকা, অ্যামেক্সের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ২৮১ কোটি টাকা, ডিনার্সের মাধ্যমে খরচ হয়েছে দুই কোটি টাকা, কিউক্যাশ প্রপ্রাইটারের মধ্যে খরচ হয়েছে এক কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত মে মাসে বাংলাদেশিরা বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করেছে ৪৫৬ কোটি টাকা, যেটি এপ্রিলে ছিল ৫০৬ কোটি টাকা। সেই হিসেবে মে মাসে কমেছে ৫০ কোটি টাকা।


বিদেশে খরচের মধ্যে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খরচ হয়েছে ১২১ কোটি, খুচরা দোকানে ৭৯ কোটি, নগদ উত্তোলন ২৬ কোটি, ফার্মেসিতে ৫৯ কোটি, কাপড় কেনায় ৩৭ কোটি, পরিবহনে ৪০ কোটি, ব্যবসায় সেবা বাবদ ৩৫ কোটি, সরকারি সেবায় ২৬ কোটি, প্রফেশনাল সার্ভিস ১৮ কোটি ও ইউটিলিটি বাবদ ১১ কোটি টাকা।


এ বিষয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানির ঈদে বাংলাদেশিরা বিদেশে তুলনামূলক কম ভ্রমণ করে। রোজার ঈদে ভ্রমণের আগ্রহটা বেশি দেখা যায়। মে মাসে কম বিদেশ ভ্রমণের জন্য বিদেশে ক্রেডিট কার্ডের খরচ কমতে পারে। তা ছাড়া দেশে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন কমার কারণ কাপড়ের ক্রয়-বিক্রয় কমে যাওয়া। কোরবানির ঈদে মানুষ গরু, ফ্রিজ ও মসলা কেনাকাটায় বেশি খরচ করে। কিন্তু কাপড়চোপড় কেনাকাটা কমে। এ কারণে দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনেও উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে।’


প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে মাসেও বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে ভারতে ৭৬ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ৭৫ কোটি টাকা। এই দুই দেশের পর বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের বেশি ব্যবহার করেছে থাইল্যান্ডে ৩৮ কোটি টাকা এবং ইউএইয়ে ৩৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে ৩৫ কোটি, সিঙ্গাপুরে ৩৩ কোটি, কানাডায় ২৭ কোটি, সৌদিতে ১৩ কোটি, মালয়েশিয়ায় ১৭ কোটি, আয়ারল্যান্ডে ১৩ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১২ কোটি ও অন্যান্য দেশে ৬৪ কোটি টাকা।

 

ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারতে সব সময়ই বাংলাদেশের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেশি হয়। কারণ এ দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতি মাসে দেশটিতে চিকিৎসার জন্য যায়। পাশাপাশি বেড়ানোর জন্যও অনেকে দেশটিতে ভ্রমণ করে নিয়মিতভাবে। এ কারণে ভারতে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচ করেছে ১৬৯ কোটি টাকা। এর আগের মাস এপ্রিলে যেটি ছিল ১৯৯ কোটি টাকা। সেই হিসেবে মে মাসে কমেছে ২৯ কোটি টাকা। 

 

বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে মার্কিন নাগরিকরা খরচ করেছে ৪০ কোটি, যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা খরচ করেছে ১৫ কোটি, ভারতের নাগরিকরা খরচ করেছে ২০ কোটি, অস্ট্রেলিয়ানরা খরচ করেছে ছয় কোটি, কানাডার নাগরিকরা খরচ করেছে পাঁচ কোটি, সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা খরচ করেছে আট কোটি, জাপানিরা খরচ করেছে সাত কোটি, ইউএইয়ের নাগরিকরা খরচ করেছে ছয় কোটি, চীনারা খরচ করেছে ছয় কোটি, সৌদি নাগরিকরা খরচ করেছে দুই কোটি, ইতালির নাগরিকরা খরচ করেছে দুই কোটি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকরা খরচ করেছে ৪১ কোটি টাকা।