হাটহাজারীর পৌরসভার আলমপুর পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের নবনির্মিত ৪০টি ঘরের বিদ্যুতের খুঁটি থেকে সার্ভিস তার চুরির অভিযোগ উঠেছে। সরকারের ভূমিহীনদের জন্য নির্মাণ করা ঘরের বিদ্যুতের তার চুরি হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ঘূর্ণিঝড় মোখার আক্রমণের রাতে তার চুরি হলেও গত এক সপ্তাহেও এর কোনো সুরাহা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই ঘরগুলো পড়ে আছে এখনো।
তবে নৈশ প্রহরী থাকার পরেও কিভাবে এতগুলো ঘরের বিদ্যুতের তার চুরি হয়েছে তা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন এলাকার জনসাধারণের মধ্যে। চুরি হওয়া বিদ্যুতের তারের মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা বলে সূত্রে প্রকাশ। গত সপ্তাহে এ ঘটনা সংঘটিত হলেও এ ঘটনার কোনো সুরাহা হয়নি। তবে ইউএনও জানিয়েছেন, এ চুরির ঘটনায় থানা পুলিশ ও প্রশাসন জোর তৎপরতা চালাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর এলাকার আলমপুরের অংশে প্রায় ১০টি ঘরের মধ্যে এখনো কাজ চলমান রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এখানে চার ধাপে মোট ২৬১টি ঘর বুঝিয়ে দিলেও অনেক পরিবার বসবাস না করাতে কার্যত ঘরগুলো খালি পড়ে আছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুর্বৃত্তের একটি চক্র ৪০টি ঘরের বিদ্যুতের তার চুরি করে কেটে নিয়ে যায়। নৈশ প্রহরীর যোগসাজশে এ চুরি সংঘটিত হয়েছে কি না এমনও প্রশ্ন তুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি।
নৈশ প্রহরীর দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ চুরির ঘটনা ঘটেছে বলেও তারা দাবি করেন। সরেজমিনে গিয়ে এ ঘরগুলোতে কোনো পরিবারের দেখা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে নৈশ প্রহরীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান। তবে কৌশলে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ৪০টি ঘরের বিদ্যুতের তার মিটারের গোড়া থেকে কেটে নিয়ে যায় চোরের দল। সেদিন রাতে ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবের ভয়ে আমি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছিলাম।
তাই কিভাবে চুরি হয়েছে আমি জানি না।
জানতে চাইলে হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন সবুজ বলেন, এ চুরির ঘটনা ইউএনও মহোদয় জানিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
বিদ্যুতের তার চুরির বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিদুল আলম বলেন, ‘৪০টি ঘরের বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়েছে তা আমরা অবগত আছি। আমরা তার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে সবাই যখন নিরাপদ স্থানে চলে গেছে, তেমনিভাবে নৈশ প্রহরীও নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। এই সুবাদে চোরচক্র সুযোগটি কাজে লাগিয়ে চুরি সংঘটিত করেছে।’ হাটহাজারী মডেল থানার ওসি এবং প্রশাসন এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তার চুরির বিষয়ে আমি জানি না। তবে ঘরের তার চুরি হলে সরকার যাদের ঘর দিয়েছে ওরাই সেটা মেরামত করবে। সরকার তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছে, ঘরের তার চুরি হয়েছে সেটা তাদের নিজেদেরই দেখেশুনে রাখতে হবে।’