কমিটিতে পদ পাওয়ার পরদিন কৃষক দল নেতাকে প্রকাশ্যে পেটালেন বিএনপি নেতা

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
আহ্বায়কের পদ পাওয়ার পরদিন ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্যসচিবকে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে। বুধবার (০৫ মার্চ) দুপুরে রৌমারী উপজেলা পরিষদ চত্বরে রৌমারী সদর ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্যসচিব আব্দুর রাজ্জাককে প্রকাশ্যে মরধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। মারধরের শিকার আব্দুর রাজ্জাক একই ইউনিয়নের কৃষক দলের সদস্যসচিব।
তবে কৃষকদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নবনির্বাচিত আহ্বায়ক ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। তিনি দাবি করেছেন, ‘শুধু কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমি কোনও মারপিট করিনি।’
কৃষক দল নেতা আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, ‘মঙ্গলবার রাতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করার পর ওই কমিটির সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিই। পোস্টটি আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাকের পছন্দ হয়নি। তিনি এতে ক্ষিপ্ত হয়েছেন। বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আমার দেখা পেয়ে আব্দুর রাজ্জাক তেড়ে আসেন। কেন ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছি, তা জানতে চেয়ে আমাকে কিলঘুষি মারেন। তার সঙ্গে থাকা লোকজনও আমাকে পেটায়।’
‘আমার সঙ্গে থাকা উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব আবুল হাসেম আমাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। পরে উপস্থিত লোকজন আমাকে উদ্ধার করে। কিন্তু হাসপাতালে গেলেও সেখানে চেয়ারম্যানের লোকজন আমাকে চিকিৎসা নিতে দেননি’ বলেন ভুক্তভোগী এই নেতা।
উপজেলা কৃষকদলের সদস্যসচিব আবুল হাসেম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যানের সঙ্গে কৃষক দলের সদস্যসচিব আব্দুর রাজ্জাকের বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় চেয়ারম্যান রাজ্জাক কৃষক দলের নেতাকে ঘুষি মারেন। পরে তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। দোষ যারই হোক, আজ যা হয়েছে; তা মোটেও ঠিক হয়নি।’
কৃষক দল নেতাকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নাউজুবিল্লাহ। মারধর করবো কেন। সে তো আমার ভাগনে হয়। একই এলাকায় বাড়ি। আমাকে নিয়ে ফেসবুকে উদ্ভট কথাবার্তা লিখেছে। আমি আজ দেখা পেয়ে পোস্ট ডিলিট করতে বলেছি। সে আমাকে উল্টা আইনের আশ্রয় নিতে বলে। আমি বলি আইনের আশ্রয় কেন নেবো? তুমি ডিলিট করলেই তো হয়ে যায়। এসব লিখো কেন, আমার সম্পর্কে তুমি জানো না।’
কৃষক দল নেতার মারধরের অভিযোগের বিষয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সেখানে শত শত মানুষ ছিল। সবাই দেখেছে। আমি মারি নাই তো। শুধু কথা কাটাকাটি হয়েছে।’
বিএনপি নেতার অস্বীকার প্রসঙ্গে কৃষক দল নেতা রাজ্জাক বলেন, ‘আমি মিথ্যা বলবো না। তিনি সবার সামনে আমাকে মারধর করেছেন। তিনি পোস্ট ডিলিট করতে বললে আমি সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করতাম। কিন্তু তিনি আমাকে কথা বলার সুযোগ দেননি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।’
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫