শিক্ষকদের আন্দোলন শেষ, বুধবার থেকেই ক্লাসে ফিরছেন তারা

দীর্ঘ ১০ দিনের টানটান উত্তেজনা ও অনশন কর্মসূচির পর অবশেষে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই তারা ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী। হাতে অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাপন নিয়ে তিনি বলেন,
“আন্দোলন প্রত্যাহার করা হলো। আমরা আগামীকাল থেকেই শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাচ্ছি।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, আগামী নভেম্বর থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ৭.৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা এবং আগামী জুলাই থেকে মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন। তবে চিকিৎসা ভাতা (১,৫০০ টাকা) ও উৎসব ভাতা (মূল বেতনের ৫০ শতাংশ) আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকবে।
অর্থ বিভাগ আরও জানিয়েছে, এ সিদ্ধান্তের আওতায় কোনো বকেয়া সুবিধা দেওয়া হবে না এবং ভবিষ্যতে অনিয়ম ধরা পড়লে বিল অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন। পাশাপাশি এমপিও নীতিমালা ও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়োগের শর্তাবলি পূরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
এর আগে সকালে সচিবালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। বৈঠক শেষে তিনি এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজীর হাতে অর্থ বিভাগের সম্মতিপত্র হস্তান্তর করেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন,
“বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। শিক্ষকরা সমাজ ও জাতি গঠনের মূল চালিকাশক্তি, অথচ তাদের প্রাপ্য সুবিধা দীর্ঘদিন ধরে সীমিত ছিল। অর্থনৈতিক বাস্তবতা সত্ত্বেও আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।”
আন্দোলন প্রত্যাহারের সময় অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন,
“সরকার ও শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের দাবির ব্যাপারে আন্তরিক ছিলেন। আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করছি, উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা এবং বদলি প্রক্রিয়া চালুর বিষয়েও দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।”
উল্লেখ্য, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা এর আগে মাসে মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতেন। পরে তা ১ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু তারা মূল বেতনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে ১২ অক্টোবর থেকে রাজধানীতে অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন। তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতেই সরকার তৃতীয় দফায় ভাতা পুনর্নির্ধারণ করে।
২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে চলমান অনশন কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
👉 চাওয়ার জয় হলো—শিক্ষকরা ফিরে যাচ্ছেন ক্লাসে, শিক্ষাঙ্গনে ফিরছে স্বস্তির বাতাস।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫