উমামা ফাতেমা গত বছরের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে সংগঠনের মুখপাত্র হন। তবে গত মাসেই তিনি সংগঠনটি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়ান।
উমামার ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন—
“চাঁদাবাজির এই খবর দেখে অনেকেই যেন বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়েছেন, যা আমার কাছে কিছুটা হাস্যকরই মনে হয়েছে। সত্যি বলতে, এই প্রথমবার তারা চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। এর আগেও অনেক কিছু ঘটেছে, কিন্তু কেউ কখনও সঠিকভাবে খোঁজ নেয়নি। খোঁজ নিলে বুঝবেন—এদের শেকড় অনেক গভীরে।”
তিনি আরও বলেন—
“এই ছেলেগুলো দীর্ঘদিন ধরে নেতাদের ‘প্রটোকল বডি’ হিসেবে সচিবালয় থেকে শুরু করে রাজপথের মিছিল-মিটিং, এমনকি হাতাহাতি-সংঘর্ষেও সরব ভূমিকা রেখেছে। অভ্যন্তরীণভাবে গুলশান-বনানী গ্যাং কালচারের মতো অনেক অভিযোগ ওদের বিরুদ্ধে ছিল। অথচ তখন কেউ চোখে দেখেনি।”
উমামা তাঁর পোস্টে অভিযুক্তদের একজন, ‘রিয়াদ’ নামের এক তরুণের কথা উল্লেখ করে লেখেন—
“গত ডিসেম্বর মাসে রূপায়ণ টাওয়ারে তার বেপরোয়া আচরণ প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা কয়েকজন মেয়ে মিলে তাকে থামানোর চেষ্টা করলেও, সে বরং আমাদের দিকেই চড়াও হয়। পরে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হুমকি ও মারামারির একাধিক অভিযোগের কথা জানতে পারি। কিন্তু এসব অভিযোগ নিয়ে কিছু বললে সংগঠনের ভেতরে ‘পিন ড্রপ সাইলেন্স’ নেমে আসত। যারাই এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলত, তারাই কোণঠাসা হয়ে যেত।”
তিনি আরও লিখেছেন—
“আজ যখন তাদের চাঁদাবাজির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, তখন অনেকেই মুখে হাত দিয়ে বিস্মিত হওয়ার ভান করছেন। অথচ আমার চোখের সামনেই তারা কীভাবে সুবিধা নিয়ে গেছে, ক্ষমতা ব্যবহার করেছে, সব কিছু দেখেছি। এখন এই প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। যে যেভাবে পেরেছে, এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে নষ্ট করেছে।”
পোস্টের শেষে উমামা ফাতেমা লিখেছেন—
“ইশ! মানুষ কতটা নিষ্পাপ! সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো আবিষ্কার করছেন যে এই ছেলেরা নাকি এখন চাঁদাবাজি করছে! দুঃখিত বন্ধুরা, বলতেই হয়—এই প্রথমবার তারা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে, কিন্তু এটাই তাদের প্রথম নয়। সঠিকভাবে অনুসন্ধান করলে দেখবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে প্রোথিত।”