|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০৩ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০২ জুন ২০২৪ ১২:৫১ অপরাহ্ণ

বনের জায়গা উদ্ধারে চলতি সপ্তাহেই ভাওয়াল রিসোর্টে অভিযান


বনের জায়গা উদ্ধারে চলতি সপ্তাহেই ভাওয়াল রিসোর্টে অভিযান


বনের জায়গা উদ্ধারে চলতি সপ্তাহেই আলোচিত ভাওয়াল রিসোর্টে অভিযান চালানো হবে। ইতিমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আদালত রিসোর্টের মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। এখন চলছে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি। এদিকে দখল হয়ে যাওয়া ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি উদ্ধারে ভুক্তভোগীরা আদালতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।


রবিবার (২ জুন) ঢাকা বন বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার ভাওয়াল রিসোর্টের মামলা খারিজ হওয়ার পর আর কোনো বাধা নেই। আমরা বনের জমি উদ্ধারে কাজ শুরু করেছি। যেকোনো সময় ভাওয়াল রিসোর্টে আমাদের বনের জমি উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় হচ্ছে। আমরা যৌথভাবেই কাজটি করছি। তবে এই সপ্তাহেই অভিযান চালানোর সম্ভাবনা বেশি।


এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ভাওয়াল রিসোর্টের করা এক মামলায় এ জমির বিষয়ে একটি স্টে অর্ডার ছিল। এ কারণে বন বিভাগ চাইলেও জেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তবে ২০১৭ সালেই জেলা জজ আদালতের স্টে অর্ডারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ যৌথভাবে আপিল করে। গত বৃহস্পতিবার এর রায় হয়েছে। আদালত আপিলটি গ্রহণ করে স্টে অর্ডারটি প্রত্যাহার ও ভাওয়াল রিসোর্টের মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে এখন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনায় কোনো বাধা নেই। তবে প্রক্রিয়া শুরু করতে কয়েক দিন লাগতে পারে।


গাজীপুরের বারইপাড়া মৌজার নীলজানি গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা সেন্টার। ১৬০ একর জমির মধ্যে বনের জমি ৬.৭৩ একর। বাকি জমির মধ্যে কিছু ক্রয় করা ও অনেক জমি জোর করে দখল করা। এই প্রতিষ্ঠানের ২৫ ভাগ মালিকানা সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের। আর বেনজীর আহমেদের ক্ষমতার দাপটেই এই প্রতিষ্ঠান বনের ৬.৭৩ একর ভূমি জবরদখল করতে পেরেছে। দীর্ঘ সময় পর অনুকূল পরিবেশ হওয়ায় ও আদালত দখলীয় প্রতিষ্ঠানের মামলা খারিজ করে দেওয়ায় এখন বেদখল হওয়া বনের জমি উদ্ধারের আয়োজন চলছে।

 

জানা গেছে,  বীর মুক্তিযোদ্ধার জমিও দখল করে করা হয়েছে। ভাওয়াল রিসোর্টের মূল প্রবেশপথের এক একরের বেশি জমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. সিরাজুল হক এবং তার মায়ের। প্রবীণ এ মুক্তিযোদ্ধা নিজের জমি উদ্ধারে বিভিন্ন জনের কাছে ধরনা দিয়েছেন। তবে বেনজীরের কারণে তারা ২০১৩ সালের পর থেকে ওই জমির ধারেকাছেও ভিড়তে পারেননি। বেনজীরের অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হলে কিছুটা সাহস পান ডা. সিরাজুল। জমি থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে গাজীপুর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি।

 

এ ব্যাপারে ডা. সিরাজুল হকের ভাই বজলুল হক জানান, ভাইয়ের জমি উদ্ধারে আজ রবিবার গাজীপুর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করতে যাচ্ছি আমরা। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে এই জমি কেনা। স্থানীয় বাসিন্দা মো. শফিউল্লাহর কাছে জমিটি বর্গা দেওয়া ছিল। ২০১৩ সালে হঠাৎ জমিটি দখল করে নেয় ভাওয়াল রিসোর্ট। পরে জানতে পারি, এর সঙ্গে পুলিশের বড় কর্তারা জড়িত। ফলে ভয়ে আমরা ওই জমির ধারেকাছেও যেতে পারিনি। এখন বেনজীরের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে দেখে আমরাও কিছুটা সাহস পাচ্ছি।

 

এলাকাবাসী জানান, ভাওয়াল রিসোর্টের মূল উদ্যোক্তা পারটেক্স গ্রুপ। ব্যাবসায়িক গ্রুপটির উদ্যোক্তা প্রয়াত এম এ হাশেমের ছেলে শওকত আজীজ রাসেল বর্তমানে এটির মালিকানায় রয়েছেন। ২০১৩ সালে গাজীপুর সদরের বারইপাড়া মৌজার নীলজানি গ্রামের কয়েকজনের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি কিনে এর সঙ্গে আরো কিছু সরকারি খাসজমি দখল করে নেন তারা। এরই মধ্যে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার থাকাকালীন জোর করে ভাওয়াল রিসোর্টের আংশিক মলিকানা দখল করেন।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫