ভিকারুননিসার শিক্ষক মুরাদ হোসেন পুলিশের দুই দিনের রিমান্ডে

প্রকাশকালঃ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:৪০ অপরাহ্ণ ২২৩ বার পঠিত
ভিকারুননিসার শিক্ষক মুরাদ হোসেন পুলিশের দুই দিনের রিমান্ডে

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার গণিত শিক্ষক মুরাদ হোসেনকে দুই দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিএমএম) বিচারক জাকি আল ফারাবি আসামিকে রিমান্ডে পাঠান।পুলিশ আসামিকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিল।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান বলেন, ‘রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় তখন সমাজ কলুষিত হয়। দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষকের এমন কর্মকাণ্ডে কোন শিক্ষকের সহযোগিতা আছে কি না তাও খতিয়ে দেখতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মেহেদী হাসান বলেন, ‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। তদন্তে প্রকৃত সত্য উঠে আসবে বলে আশা করি।

 

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে রাজধানীর কলাবাগানের বাসা থেকে মুরাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লালবাগ থানার এসআই বলেন, এক ভুক্তভোগীর মায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

সোমবার রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানিজিং কমিটি, তদন্ত কমিটি এবং অধ্যক্ষ দীর্ঘ ভার্চুয়াল মিটিং করেন। মিটিংয়ে মুরাদকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভিকারুননিসা স্কুলের আজিমপুর শাখার শিক্ষক মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে শাখা প্রধান সাবনাজ সোনিয়া কামালের মাধ্যমে অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরীর কাছে যৌন হয়রানির ও নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ করেন একাধিক অভিভাবক। পরদিন (৮ ফেব্রুয়ারি) অধ্যক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

 

আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মমতাজ বেগমকে কমিটির আহ্বায়ক করার পাশাপাশি সদস্য করা হয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা খানম ও ইংরেজি প্রভাতি শাখার শাখা প্রধান শামসুন আরা সুলতানা। তবে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে অস্বাভাবিক কালক্ষেপণ করলে অভিযোগকারীরা সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি জানান।

২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিনের বাংলাদেশে ভিকারুননিসায় আরেক পরিমল, শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে। নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার কেকা রায় চৌধুরীর সাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, শিক্ষক মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে আজিমপুর শাখা থেকে তাকে সরিয়ে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

 

ওই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে আসছেন ছাত্রী ও অভিভাবকেরা। এই দাবিতে ছাত্রীরা গত রবিবার আজিমপুর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে। একই দিনে অভিভাবকেরা সংবাদ সম্মেলন করে ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন।

অভিভাবক ও ছাত্রীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক কোচিংয়ে পড়ানোর সময় ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন।