জাবির রসায়ন বিভাগ চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায়

প্রকাশকালঃ ১৪ জুন ২০২৩ ০১:৫৮ অপরাহ্ণ ২১৩ বার পঠিত
জাবির রসায়ন বিভাগ চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষার একটি কোর্সের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় পরীক্ষাটি বাতিল করা হয়েছে। পরীক্ষার কক্ষে পূর্বলিখিত উত্তরপত্র নিয়ে প্রবেশ করার অভিযোগে এক শিক্ষার্থীর খাতা বাতিল করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম জাহিদ মোস্তফা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী।

তবে এক বছর পিছিয়ে পড়ায় ৪৭ ব্যাচের সাথে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তিনি। গত রবিবার (১১ জুন) টপিকস ইন বায়োকেমিস্ট্রি নামে ৪৩৩ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উক্ত বর্ষের বাকি পরীক্ষাগুলো স্থগিত করেছে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রসায়ন ভবনের ২০২ নম্বর কক্ষে দুপুর ২টায় পরীক্ষা শুরু হয়।

পরীক্ষা শুরুর প্রায় ১০ মিনিটের সময় কক্ষের পরিদর্শক অধ্যাপক নাছরিন জুয়েনা অভিযুক্ত জাহিদকে সন্দেহ করেন। এক পর্যায়ে খাতা চেক করতে গেলে জাহিদের কাছে একটি সম্পূর্ণ লিখিত উত্তরপত্র পাওয়া যায়। পরে পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার পূর্ব লিখিত উত্তরপত্র বাতিল করা হয়। আরো জানা যায়, অধ্যাপক জুয়েনা চতুর্থ বর্ষের (৪৭ ব্যাচের) দুইটি কোর্স নিয়েছেন।


এর মধ্যে ৪০০ নম্বর কোর্সে চূড়ান্ত পরীক্ষায় লিখিত অংশে ৩৫ নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ পায় জাহিদ। কিন্তু ওই কোর্সের টিউটোরিয়াল পরীক্ষার নম্বরের সাথে মূল পরীক্ষায় জাহিদের পাওয়া নম্বরের সামঞ্জস্য ছিলো না। এ কারণে কোর্স শিক্ষক জুয়েনার সন্দেহ হয়। পরে ৪৩৩ নম্বর কোর্সের পরীক্ষার সময় রোল নম্বর মিলিয়ে জাহিদকে তলব করা হলে তার কাছে ওই কোর্সের পূর্ব লিখিত একটি উত্তরপত্র পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে অধ্যাপক নাছরিন জুয়েনা গণমাধ্যমকে বলেন, তার কাছে নকল পাওয়া গিয়েছে এবং পরীক্ষার খাতা এক্সপেল হওয়ার মত যথেষ্ট এভিডেন্স পাওয়া গিয়েছে।

তখন আমরা খাতা বাতিল করে চেয়ারম্যানের কাছে রিপোর্ট করে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির কাজ চলাকালীন আমি আর কোন কথা বলতে চাচ্ছি না।
 

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুব কবির বলেন, বিভাগের চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় এক শিক্ষার্থী পূর্ব লিখিত উত্তরপত্রসহ ধরা পড়ে। এ বিষয়ে অধ্যাপক তপন কুমার সাহাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বিভাগ থেকে। তদন্তের জন্য ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। ততদিন পর্যন্ত বিভাগের উক্ত বর্ষে বাকি পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হয়েছে।

পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আরজু মিয়ার সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত জাহিদ মোস্তফা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এর জন্য আমাকে পরীক্ষার হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে আমার শাস্তি পেয়ে গেছি।’ তবে প্রশ্ন ফাঁসে বিভাগের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী সহযোগিতা করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চান না বলে জানান।