নির্বাচনের আগে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জিহাদ হোসেন (নারায়ণগঞ্জ) বিশেষ প্রতিনিধি:-


 

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সক্রিয় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গণঅভ্যুত্থানে লুট হওয়া অস্ত্রসহ যেসব অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি, সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

 

শনিবার নারায়ণগঞ্জের র‍্যাব-১১ সদর দপ্তর এবং পরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
 

তিনি বলেন, "দেশে এখনো কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। তবে নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে সব অস্ত্র উদ্ধার করা হবে। এই কাজে রাজনৈতিক দলগুলোকে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে হবে।"
 

পুশইন বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশিদের পুশইনের বিষয়টি তুলে ধরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “গত এক মাসে প্রায় ১,৫০০ বাংলাদেশিকে ভারত থেকে পুশইন করা হয়েছে—তথ্যটি সঠিক। আমাদের নাগরিকদের আমরা অবশ্যই গ্রহণ করবো, তা ১০ কিংবা ২০ বছর পর হলেও।”
 

তবে রোহিঙ্গা পুশইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের যেভাবে সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে, তা আমরা গ্রহণ করছি না। তাদের আমরা ফেরত পাঠাচ্ছি।”
 

তিনি অভিযোগ করেন, ভারত সরকার অনেক সময় নিয়ম না মেনে নদীর পাড়ে বা জঙ্গলে লোকজন ফেলে দিয়ে যাচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং তাতে কিছুটা অগ্রগতি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
 

মোহাম্মদপুর ছিনতাই ও নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা

মোহাম্মদপুরে আলোচিত ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “তিনজনকে গ্রেপ্তার ও ছিনতাইকৃত ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত টিম কাজ করছে। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। এমনকি দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলেও সংশ্লিষ্টদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে।”
 

নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের মাঠে থাকবে, আর আমাদের দায়িত্ব হবে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সাংবাদিকরা সত্য তুলে ধরলে বিভ্রান্তি দূর হবে।”
 

গণঅভ্যুত্থান মামলার অগ্রগতি

জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানের মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “বেশ কিছু মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে। তবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনেককে আসামি করায় তদন্তে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। নিশ্চিত করা হচ্ছে, যেন কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন।”
 

পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন র‍্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক এবং নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ মজুমদার।