|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৪০ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:৫৬ অপরাহ্ণ

নম্রতা ও কোমলতা মহান আল্লাহর প্রিয় হওয়ার অন্যতম মাধ্যম


নম্রতা ও কোমলতা মহান আল্লাহর প্রিয় হওয়ার অন্যতম মাধ্যম


ম্রতা ও কোমলতা মহান আল্লাহর প্রিয় হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। এই গুণের মাধ্যমে বিশ্ব জয় করা যায়। আমাদের নবীজি (সা.) এই মহৎ গুণ দিয়ে গোটা বিশ্ব জয় করেছিলেন। বর্বর ও হিংস্র মানুষদের মন জয় করে, তাদের সোনার মানুষে পরিণত করেছিলেন।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং আল্লাহর পরম অনুগ্রহ যে তুমি তাদের ওপর দয়ার্দ্র রয়েছ এবং যদি তুমি রূঢ় মেজাজ ও কঠিন হৃদয় হতে, তবে অবশ্যই তারা তোমার নিকট থেকে সরে যেত। সুতরাং তাদের দোষ ক্ষমা করো এবং আল্লাহর কাছে তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা চাও এবং কাজ-কর্মে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করো, অতঃপর যখন (কোনো ব্যাপারে) সংকল্পবদ্ধ হও, তখন আল্লাহরই প্রতি ভরসা করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ ভরসাকারীদের পছন্দ করেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৯)

এখানে মহান আল্লাহ মহানবী (সা.)-এর নম্রতার প্রশংসা করেছেন, আর এটি যে মানুষকে জয় করার একটি চাবিকাঠি, সেদিকেও ইঙ্গিত করেছেন। নবী (সা.) এতটাই নম্র ছিলেন যে এক বেদুইন একবার মসজিদে পেশাব করে দিলেও তিনি তাকে কোনো শাস্তি দেননি।


বরং সাহাবায়ে কেরামকে ভদ্রতা প্রদর্শনের পরামর্শ দেন। এবং বলে দেন, ‘তোমাদের কোমল ও সুন্দর আচরণ করার জন্য পাঠানো হয়েছে, রূঢ় আচরণ করার জন্য পাঠানো হয়নি।’ আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একবার একজন বেদুঈন দাঁড়িয়ে মসজিদে পেশাব করল। তখন লোকেরা তাকে বাধা দিতে গেলে নবী (সা.) তাদের বলেন, তোমরা তাকে ছেড়ে দাও এবং ওর পেশাবের ওপর এক বালতি পানি ঢেলে দাও। কারণ তোমাদের কোমল ও সুন্দর আচরণ করার জন্য পাঠানো হয়েছে, রূঢ় আচরণ করার জন্য পাঠানো হয়নি। (বুখারি, হাদিস : ২২০)

অর্থাৎ নম্র ও সুন্দর আচরণ করাই মুমিনের ভূষণ। রূঢ় আচরণ মুমিনের চরিত্রের সাথে যায় না। নম্র লোকদের আমাদের নবীজি (সা.) ভীষণ ভালোবাসতেন, তাই তো নম্রতার কারণে তিনি ইয়েমেনবাসীর ঈমানের প্রশংসা করেছেন । আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ইয়েমেনবাসী তোমাদের কাছে এসেছে।


তাঁরা অন্তরের দিক থেকে অত্যন্ত কোমল ও দরদি। ঈমান হলো ইয়েমেনীদের, হিকমাত হলো ইয়েমেনিদের, গরিমা ও অহংকার রয়েছে উটওয়ালাদের মধ্যে, বকরি পালকদের মধ্যে আছে প্রশান্তি ও গাম্ভীর্য। (বুখারি, হাদিস : ৪৩৮৮)

কারো সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করলেই সম্মান বেড়ে যায় না। অন্যকে সম্মান করলে, নম্র আচরণ করলে মর্যাদা কমে যায় না; বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কেউ মানুষের সঙ্গে নম্র আচরণ করলে মহান আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবু হুরায়রা? (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সদকা? করাতে সম্পদের হ্রাস হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা সমুন্নত করে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৮৬)

এর বিপরীতে অহংকার, রূঢ় স্বভাব মানুষের ব্যক্তিত্ব খাটো করে দেয়, মানুষকে ইহকালে অন্যদের চোখে নিন্দিত করে তোলে, আর পরকালে তাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত করে দেয়। হারিস ইবনে ওয়াহাব খুজাঈ (রা.) বলেন, আমি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আমি কি তোমাদের জান্নাতি লোকদের পরিচয় বলব না? তারা দুর্বল ও অসহায়; কিন্তু তাঁরা যদি কোনো ব্যাপারে আল্লাহর নামে কসম করে বসেন, তাহলে তা পূরণ করে দেন। আমি কি তোমাদের জাহান্নামি লোকদের পরিচয় বলব না? তারা রূঢ় স্বভাব, অধিক মোটা ও অহংকারী তারাই জাহান্নামি।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯১৮)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে নম্র হওয়ার তাওফিক দান করুন।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫