প্রকাশকালঃ
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৫:১৫ অপরাহ্ণ ২০৫ বার পঠিত
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত হিমাদ্রি লিমিটেডের শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কারসাজির মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির ৩৫ টাকার শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৭১৪ টাকা। সেই হিসাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছয় মাসে ১০৬ গুণ বা ৩ হাজার ৬৭৯ টাকা বেড়েছে। গত জুন মাস থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম একটানা বৃদ্ধি পায়।
এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে ১০ শতাংশ দাম বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারের। এভাবে টানা অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়লেও এই কোম্পানির বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
মাত্র তিন মাসে একেকটি শেয়ারের দাম সাড়ে তিন হাজার টাকার বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার পর গত সপ্তাহে তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তা–ও আবার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিএসইকে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ৩৮ টাকা ৮০ পয়সা। ২৯ আগস্ট সেই দাম বেড়ে হয় ৩ হাজার ৬৯ টাকা। এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে ২৭ এপ্রিল থেকে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের ওপর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। হিমাদ্রি লিমিটেড মূলত উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হিমাগার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কোম্পানিটি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ওটিসি থেকে এসএমই বোর্ডে যুক্ত হয়। এটির মোট শেয়ারের সংখ্যা সাড়ে সাত লাখ।
এর মধ্যে বড় অংশই রয়েছে কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের হাতে। ডিএসইর ওয়েবসাইটে যে তথ্য রয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, গত জুনের শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রায় ৬৬ শতাংশই ছিল উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৩৩ শতাংশ সাধারণ শেয়ারধারীদের কাছে এবং ১ শতাংশের বেশি শেয়ার সরকারের হাতে রয়েছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বরেও কোম্পানিটির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে ছিল কোম্পানির ৯৮ শতাংশের বেশি শেয়ার। ডিসেম্বরের পর উদ্যোক্তা–পরিচালকেরা তাঁদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করেন। এদিকে গত মে মাসে ডিএসইর এক নোটিশের জবাবে কোম্পানিটি জানায়,
তাদের তিন পরিচালক কোম্পানির কিছু শেয়ার বিক্রি করেছেন। একটি হিমাগার কোম্পানির শেয়ারের এ রকম অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে কারসাজির বড় উদাহরণ বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী প্রথম আলোকে বলেন,
নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিষ্ক্রিয়তার কারণে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে বাজারে যখন মন্দা ভাব চলছে, তখন হাতে গোনা কিছু কোম্পানির শেয়ার নিয়ে দিনের পর দিন কারসাজির ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। এসব কারসাজি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সময়মতো কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এমন ঘটনা বারবার ঘটছে।