কুড়িগ্রামে ফেসবুক পোস্ট নিয়ে বিএনপির ২ গ্রুপে সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ৫
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলায় ফেসবুকে ‘উসকানিমূলক’ পোস্টের জেরে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলা শহরের কয়েকটি স্থানে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয়। তবে রাত সাড়ে ৮টায় পর্যন্ত তাদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান এবং উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রোস্তম মাহমুদের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের চার জন আহত হন। আহতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাদের চার জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় মোখলেছুর রহমানের সমর্থকরা স্থানীয় সাংবাদিক সুজন মাহমুদের ওপর হামলা করেন। পরে উপজেলার সাংবাদিকরা সুজন মাহমুদকে উদ্ধার করেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, রবিবার জেলা বিএনপির ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান জেলা আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পাননি। এ নিয়ে সহিদুল নামে এক যুবদল কর্মী ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দেন। তিনি রোস্তম মাহমুদের সমর্থক। ওই পোস্টের জেরে সন্ধ্যায় রাজিবপুর সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় গেটের সামনে সহিদুলকে কিলঘুষি মারেন মোখলেছের সমর্থক কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী।
খবর পেয়ে রোস্তমের সমর্থকরা রাজিবপুর পাঁচ রাস্তা মোড়ে মোখলেছুর রহমানের অনুসারীদের মারধর করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মোখলেছুর রহমানের অনুসারীরা রাজিবপুর বাজারে রোস্তমের অনুসারীদের ওপর হামলা করেন। উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ইয়াকুব নামে এক যুবদল কর্মী ও সাংবাদিক সুজনসহ পাঁচ জন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সাংবাদিক সুজন মাহমুদ বলেন, ‘সহকর্মীদের সঙ্গে বাজারে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, সাব্বির হোসেনসহ কয়েকজন মিলে আমার ওপর হামলা করেন। সঙ্গে থাকা সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করেন।’
‘তাদের উভয় পক্ষের সংঘর্ষের সময় তারা আমাকেও মারধর করেন। মোখলেছকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে আমার ওপর তাদের ক্ষোভ ছিল’ হামলার কারণ সম্পর্কে বলেন সুজন।
উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রোস্তম মাহমুদ বলেন, ‘আমি এলাকায় ছিলাম না। আমাদের এখানে কোনও পক্ষ ভাগ নেই। জুনিয়রদের মধ্যে হালকা হাতাহাতি হয়েছে। তেমন গুরুতর কিছু নয়। একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’
সংঘর্ষের বিষয়টি স্বীকার করলেও তাতে নিজের সম্পৃক্ততার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। বিরোধের বিষয়ে কিছুই জানি না। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি। হাসপাতালে ভর্তি আহত একজনের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারকে অনুরোধ করেছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক হাসিবুর রহমান বলেন, ‘আহত চার জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ইয়াকুবকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়েছে।’
রাজিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘ফেসবুকে পোস্ট করা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫