জাবিতে সবুজ ধ্বংস করে খেয়াল-খুশির উন্নয়ন বন্ধের দাবি

মাস্টারপ্ল্যান ব্যতীত অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে ভূমিগ্রাস ও সবুজ বন ধ্বংস করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার (২৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশনের (জেইউডিও) সাধারণ সম্পাদক তাপসী প্রাপ্তির সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেস্কিউ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মাহফুজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের ভবনের জন্য সুন্দরবন নামক জায়গাটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
অথচ এই জায়গা নির্ধারণের বিষয়ে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অংশীজনের সঙ্গে কথা বলেনি। এর আগেও একই বিভাগের ভবনের জন্য আরেকটি জায়গা নির্ধারণ করে গাছ কাটা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব বিষয়ে সব সময় অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে উদাসীন। এভাবে চলতে থাকলে সব বিভাগই আলাদা ভবনের দাবি করবে।
আর এই ক্যাম্পাস একটি কংক্রিটের স্থাপনায় রূপান্তরিত হবে।
সঞ্চালক তাপসি প্রাপ্তি বলেন, আইবিএ ভবন নির্মাণের জন্য পূর্বেও মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে গাছ কাটা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেকোনো উন্নয়নের জন্য বারবার গাছপালাসমৃদ্ধ জায়গা বেছে নিচ্ছে। আর যারাই প্রশাসনের এই অপরিকল্পনার বিরুদ্ধে কথা বলেছে, তাদের উন্নয়নবিরোধী ট্যাগ দেওয়া হয়েছে।
আমরা উন্নয়নের বিরুদ্ধে নই। আমরাও চাই ভবন হোক। তবে গাছপালা কেটে, পশু-পাখির ক্ষতি করে উন্নয়ন আমরা চাই না।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৪৪৫ কোটি টাকার বাজেট পেয়ে গাছ কাটার পেছনে উঠে-পড়ে লেগেছে। হল নির্মাণের সময় থেকে গাছ কাটার এই মহড়া শুরু হয়েছে।
অথচ এই প্রশাসন পাঁচ বছরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য আমাদের কোনো মাস্টারপ্ল্যান দিতে পারেনি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য গাছসমৃদ্ধ সুন্দরবন এলাকাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এর আগেও মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে একটি জায়গায় একই বিল্ডিংয়ের জন্য গাছ কাটা হয়েছে। আমরা চাই সব বিভাগই ভবন পাক। তবে সেটা মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের মাধ্যমে হতে হবে। পরিবেশের সঙ্গে এই গাদ্দারি চলবে না। সবুজ বনায়ন ধ্বংসের এই মহড়া বন্ধ করতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচি বলেন, এই ক্যাম্পাসের যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই বিকলাঙ্গের চিত্র দেখতে পাবেন। একের পর এক অপূর্ণাঙ্গ ভবনে ভরে আছে ক্যাম্পাস। যদি এভাবে গাছ কাটা হয় তাহলে আমরাও আর বসে থাকব না। গাছ কাটার এই মহাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫