শনিবার কোয়ালিটি লাইফ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সুন্দরবনের দক্ষিণে গহীনে কালাবগির ঝুলন্তপাড়ায় জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে ২১০০ হাঁসের বাচ্চা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় নারীদেরকে শাড়ি ও শিশুদের জন্য জামাকাপড়ও দেওয়া হয়। হাঁসের বাচ্চা ও উপহার পেয়ে খুব খুশি ঝুলন্তপাড়ার সব শ্রেণির নারী-পুরুষ ও শিশু। তারা বলেন, হাঁসের বাচ্চাগুলো লালন পালন করে তারা স্বাবলম্বী হতে পারবেন।
এ সময় তারা সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য অনুরোধ জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, দেশের সর্ব দক্ষিণে সুন্দরবনের গহীনে সুতারখালি ইউনিয়নের কালাবগির পাশে শিবসা ও ভদ্রা নদীর মাঝে জলবায়ুর পরিবর্তনের অভিঘাতে হাজারো মানুষের দুঃখ দুর্দশায় পতিত দরিদ্র, নিঃস্ব, বঞ্চিত জনবসতির নাম ঝুলন্তপাড়া। এটি বাংলাদেশের সর্বশেষ জনবসতি। স্থানীয়রা জানান, যেখানে কয়েক বছর আগেও স্বাভাবিক জীবনযাপন ছিল কিন্তু এখন বাঁশের খুটি আর গোলপাতা দিয়ে তৈরি তাদের ঝুলন্ত ঘরগুলোতে জোয়ারের সময় পানি এসে পাটাতন ডুবে যায় আবার ভাটার সময় পাটাতনের নীচে কাদা জমে থাকে। বিভিন্ন সময় ঝড়, শীত, শোক আর দারিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করেই তারা বেঁচে থাকেন।
এর মধ্যেই শীতকালে বাঘের ভয়, গরমকালে সাপের ভয় আর সারাবছর কুমির ও দস্যুর ভয় নিয়েই ঝুলন্তপাড়ার অসহায় মানুষগুলো কোনোরকমে জীবন নিয়ে বেঁচে আছেন। স্থানীয়রা আরও বলেন, লবণাক্ত পানি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সুবিধা নেই বললেই চলে সেখানে। অনুষ্ঠানে জলবায়ুর পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ছিন্নমূল ঝুলন্তপাড়ার হতদরিদ্র মানুষের অমোচনীয় দুঃখগাঁথা নিরসনকল্প কাজে অংশ নিয়ে কিউ এল এফের সমন্বয়ক ডা. দলিলুর রহমান বলেন, ঝুলন্তপাড়ার মানুষদের স্বাবলম্বী করতে আমাদের প্রচেষ্টা চলমান থাকবে এবং এখানকার মানুষের সুপেয় পানির জন্য ডিসেলাইনেশন প্রজেক্টসহ তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা সুবিধার জন্য চেষ্টা করা হবে। তিনি দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ, সামর্থ্যবানদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কোয়ালিটি লাইফ ফাউন্ডেশনের সদস্য ডা. ইশরাত জাহান, বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের বায়োলজির অধ্যাপক মু. আনোয়ার সাদাত, বেসরকারি চাকরিজীবী সাহেরা হক, উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী ফেরদৌস তুষার, স্থানীয় সংগঠক বরেন্দ্রনাথ রয়, স্থানীয় সদস্য বিউটি রয়, স্থানীয় ব্যবসায়ী মিতা প্রমুখ।