মধ্যরাত থেকে সারাদেশে বন্ধ হতে পারে ট্রেন চলাচল

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৩:২৬ অপরাহ্ণ   |   ৮৪ বার পঠিত
মধ্যরাত থেকে সারাদেশে বন্ধ হতে পারে ট্রেন চলাচল

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ২৮ জানুয়ারির প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন না হওয়ায়, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানান, তারা ২৮ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখবেন। তিনি আরও বলেন, “যদি ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে চায়, তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে স্পষ্টীকরণ চিঠি দিতে হবে, রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে নয়। এটি নতুন কিছু নয়, ১৬০ বছর ধরে চলে আসা একটি নিয়ম, যা হঠাৎ বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা বারবার সময় দিয়েছি, আন্দোলন করেছি, কিন্তু এবার আর সরে আসার সুযোগ নেই।”
 

তিনি ট্রেনের জনবল সংকট নিয়ে বলেন, “আমাদের মোট ২,৩৬০ জন রানিং স্টাফ থাকার কথা, কিন্তু বর্তমানে আছেন ১,০৩৬ জন। একে একে সবাইকে দ্বিগুণ কাজ করতে হয়, ফলে অতিরিক্ত মাইলেজের টাকা আমাদের নিতে হয়, যা কষ্টকর।” ১-৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা আইনগতভাবে কর্মরত থাকার সময় বেশ কিছু ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তিত হয়েছে এবং কিছু ট্রেন বাতিলও হয়েছে, কারণ একজন রানিং স্টাফই একাধিক ডিউটি পালন করেছেন।
 

মজিবুর রহমান আরও জানান, ৯ ডিসেম্বর রেলওয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন, তবে ১০ দিনের সময় চেয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা কোনো সমাধান পাননি। এর ফলে, তিনি ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন।
 

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা রানিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন এবং আন্দোলন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
 

উল্লেখ্য, রেলওয়ে আইন অনুযায়ী, একজন রানিং স্টাফ তার ডিউটি শেষ করে নির্ধারিত বিশ্রাম সময় পান। তবে, যদি তাদের বিশ্রাম সময় কমানো হয়, তাহলে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল, যা রেলওয়ে ‘মাইলেজ’ সুবিধা নামে পরিচিত।
 

২০২১ সালের ৩ নভেম্বর, অর্থ মন্ত্রণালয় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে মাইলেজ সুবিধা সীমিত করার নির্দেশ দেয়, যার ফলে রানিং স্টাফরা ক্ষুব্ধ হন। তারা জানান, এর ফলে তাদের পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা কমে যাবে। ২০২2 সালে এর বিষয়ে আবারো আলোচনা হয়, তবে কোনো সমাধান মেলেনি।
 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশে রানিং স্টাফদের প্রতি মাসে রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া আর কোনো ভাতা প্রাপ্য হবে না। এ বিষয়টি আরও ক্ষোভ তৈরি করেছে, কারণ তারা জানাচ্ছেন যে, ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হলে অতিরিক্ত অর্থ ছাড়া তারা আর কাজ করতে পারবেন না।
 

সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষয়টি নিয়ে আরও উত্তেজনা বেড়েছে, এবং রেলওয়ে কর্মকর্তাদের প্রতি রানিং স্টাফদের ক্ষোভ আরও গভীর হয়ে উঠেছে।